দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মনোবিদরা বলেছেন, স্মৃতিনাশ মানে কেবল ভুলে যাওয়াই নয়। এর নীচে আশ্রয় নেয় মনের আরও অনেক অসুখও। কোনোটা ভুলে যাওয়ার রোগ, কোনোটার ক্ষেত্রে ব্যবহারে হঠাৎ বদল, আবার কারও প্রচণ্ড আগ্রাসী মনোভাব দেখা যায়।

স্মৃতিনাশ কিংবা ডিমেনশিয়ার মতো মানসিক ব্যাধি একা একা আসে না, আরও নানা অসুখকে সঙ্গী করেই আসে। তাই ডিমেনশিয়া তলে তলে বাসা বাঁধছে কি-না, তার লক্ষণ ধরা পড়ে না অনেক সময়। মনোবিদরা বলেছেন, স্মৃতিনাশ মানে কেবল ভুলে যাওয়াই নয়। এর নীচে আশ্রয় নেয় মনের আরও অনেক অসুখও। কোনোটা ভুলে যাওয়ার রোগ, কোনোটার ক্ষেত্রে ব্যবহারে হঠাৎ বদল, আবার কারও প্রচণ্ড আগ্রাসী মনোভাব দেখা যায়। প্রতিটি উপসর্গই ধরা পড়ে ধীরে ধীরে। যে কারণে যতোদিনে পরিষ্কার হয়, রোগী ডিমেনশিয়ার শিকার, ততোদিনে পানি গড়িয়ে যায় অনেক দূর অবধি। তাই স্মৃতিনাশের লক্ষণ গোড়াতেই চিহ্নিত করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রয়োগে নতুন এক যন্ত্র তৈরি করেছেন স্কটল্যান্ডের ডেটা বিজ্ঞানীরা।
এডিনবার্গ ইউনিভার্সিটি এবং গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা একযোগে সেই গবেষণা চালাচ্ছেন। গবেষকরা জানিয়েছেন যে, একজন মানুষ ভবিষ্যতে স্মৃতিনাশের সমস্যায় ভুগতে পারেন কি-না, তার কিছু লক্ষণ আগে হতেই বোঝা সম্ভব। আর তা ধরা পড়ে চোখেই। রেটিনা এবং অপটিক স্নায়ুতে এমন ছোট ছোট কিছু বদল আসে যা দেখে স্নায়ুবিক রোগ চিহ্নিত করা সম্ভব। যদিও খালি চোখে সেটি ধরা পড়বে না। এরজন্য উন্নত মানের যন্ত্র দরকার। তেমনই একটি যন্ত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
স্মৃতিনাশের দু’টি প্রধান পর্যায়ও রয়েছে। যারমধ্যে একটি অ্যালঝাইমার্স। যেখানে রোগী সব কিছুই ভুলতে শুরু করেন। দ্বিতীয়টি হলো ‘ভাসকুলার ডিমেনশিয়া’। এই পর্বে রোগীর আচার-আচরণ বদলেও যেতে শুরু করে। হয়তো দেখবেন যে, কোনও একটি কাজে তিনি মন বসাতে পারছেন না। এমন লক্ষণ দিনের পর দিনই দেখা যাচ্ছে। নিজে থেকে কিছু ভাবতে কিংবা সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। কথা বুঝতেও সমস্যা হচ্ছে। অনেকগুলো কাজ দিলে কোনওটাই করে উঠতেও পারছেন না। সেই সঙ্গে ব্যবহারেও বদল আসবে। অতিরিক্ত উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় ভুগতে শুরু করবেন এর রোগী। এই সবই নাকি চোখ দেখে আগে থেকেই বোঝা সম্ভব।
আগের কয়েকটি গবেষণা দেখিয়েছিল যে, রেটিনা জরিপ করে হৃদরোগ, কিডনির অসুখসহ আরও কিছু জটিল রোগের লক্ষণ আঁচ করা যেতেই পারে। আর এবার এই গবেষণা দেখালো যে, রেটিনা খুঁটিয়ে দেখে মনের রোগের আভাস পাওয়া সম্ভব হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org