দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ডিজিটাল এই যুগে স্মার্টফোন চুরি হওয়া কিংবা হারিয়ে যাওয়া সাধারণ একটি সমস্যা। প্রিয় গ্যাজেটটি হারালে বেকায়দায় পড়তে হয় আমাদের। কেনোনা, এখন নিত্যদিনের নানা কাজ ফোন দিয়েই সারতে হয়। তাই স্মার্টফোন হারালে উদভ্রান্তের মতোই লাগে।
মোবাইল ফোন চুরি কিংবা হারালে এতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল তথ্যও বেহাত হতে পারে। তাই ব্যবহারকারীরা যাতে অনায়াসে নিজেদের ফোন খুঁজে পান, সেজন্য অ্যানড্রয়েড ফোনের জন্য বিশেষ ফিচার দিলো গুগল। যার নাম হলো ফাইন্ড মাই ডিভাইস (Find My Device)।
এই ফিচারের সাহায্যেই ব্যবহারকারীরা নিজেদের স্মার্টফোনের লোকেশন ট্র্যাক করতে পারবেন খুব সহজে। শুধু তাই নয়, এর সাহায্যে ফোন লক করা যাবে, এমনকি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস হতে নানা তথ্য, ছবি এবং ভিডিও মুছে পর্যন্তও ফেলা যাবে।
যদিও এই পরিস্থিতিতে ফাইন্ড মাই ডিভাইস ফিচার ব্যবহার করার জন্য নিজের সমস্ত ডিভাইসে এই ফিচারটি সেট-আপ করতে হবে। যাতে করে ফোন হারিয়ে গেলে তা পাওয়ার জন্য এই ফিচারটি ব্যবহার করা যায়।
গুগলের ফাইন্ড মাই ডিভাইস ফিচার সেট-আপ কিভাবে করা যাবে সেটি আজ জেনে নিন:
# আপনাকে প্রথমেই নিশ্চিত করতে হবে যে, অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে যেনো অ্যানড্রয়েড ৪.১ বা তার হায়ার ভার্সন চলে।
# ব্যবহারকারীর ডিভাইসের লোকেশন ট্র্যাক করার জন্য লোকেশন সার্ভিসেসের প্রয়োজন হয় ফাইন্ড মাই ডিভাইসটির। এবার Settings > Location-এ গিয়ে লোকেশন সার্ভিসটি অন করতে হবে।
# ব্যবহারকারীর ডিভাইস তার গুগল অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যেনো লিঙ্কড থাকে। এটি কিন্তু জরুরি।
# এখন ফাইন্ড মাই ডিভাইস এনেবল করতে হবে : সে জন্য Settings > Google > Find My Device-এ যেতে হবে।
# Find My Device অন রয়েছে কি না, সেটি দেখতে হবে।
# প্রয়োজনীয় অনুমতিও দিতে হবে।
# সঠিক লোকেশন ডেটার জন্য ব্যাকগ্রাউন্ডে Find My Device টি চালিয়ে রাখতে হবে। সেইসঙ্গে এর জন্য অ্যাকটিভ ইন্টারনেট কানেকশন, ওয়াই-ফাই বা মোবাইল ডেটা অন থাকতে হবে।
Find My Device ফিচার ব্যবহারের উপায়:
# ফোন হারিয়ে গেলে অন্য ডিভাইস হতে Find My Device ওয়েবসাইট ওপেন করতে হবে। বা অন্য অ্যানড্রয়েড ডিভাইসে Find My Device টি অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারেন।
# তারপর নিজের গুগল অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করতে হবে। হারিয়ে যাওয়া ডিভাইসের সঙ্গে লিঙ্ক করা গুগল অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করতে হবে। এটি ব্যবহারকারীর ডিভাইসের তথ্য সিস্টেম ব্যবহার করারও অনুমতি পায়।
# একবার সাইন-ইন করা হলেই ফাইন্ড মাই ডিভাইস একটি ম্যাপের মধ্যে তখন ব্যবহারকারীর হারানো ডিভাইসকে খোঁজার চেষ্টা করবে। ডিভাইসের কানেক্টিভিটি ও লোকেশন সেটিংসের মতো একাধিক ফ্যাক্টরের উপরেই নির্ভর করে লোকেশনের নির্ভুলনতা।
এবার বেছে নিতে হবে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো:
এই অপশনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর ডিভাইস ৫ মিনিটের জন্য ফুল ভলিউমেই বেজে উঠবে, এমনকি সেটি সাইলেন্ট বা ভাইব্রেশন মোডে থাকলেও।
সিকিউর ডিভাইস:
যদি কখনও মনে হয় কেও ব্যবহারকারীর ডেটা অ্যাক্সেস করছেন, তাহলে তিনি দূরে বসেই ডিভাইস লক করে দিতে পারেন।
ইরেজ ডিভাইস:
সর্বশেষ বিকল্প অনুসারে নিজের ডিভাইস মুছেও দিতে হবে। পুরোপুরি সমস্ত ডেটা, অ্যাপ, ফাইল ডিলিট করাও সম্ভব।
ব্যাটারি ও নেটওয়ার্ক পরীক্ষা করা:
ব্যবহারকারীর ডিভাইসের ব্যাটারি লেভেল ও নেটওয়ার্ক কানেকশনের বিষয়েও রিয়েল-টাইম ইনফরমেশন দিতে পারে Find My Device।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org