দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইউক্রেন সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে অনেক বিষয়েই একমত নন বলে জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে তাদের এই মতভেদ সামনে উঠে এসেছে। আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের অনলাইন প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
গতকাল (সোমবার) ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে আলোচনায় বসেন ম্যাক্রোঁ। পরে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ বলেন যে, আমরা যুদ্ধ বন্ধ করতে দ্রুতই চুক্তি চাই। তবে সেই চুক্তিটি ভঙ্গুর হলে চলবে না। শান্তি মানেই এই নয় যে, ইউক্রেনকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
ম্যাক্রোঁ বলেছেন যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করা ভালো। তবে পুতিনের দাবি মেনে ইউক্রেন আত্মসমর্পণ করলে তাতে আমেরিকার দুর্বলতাই আরও প্রকট হবে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের মতে, ইউক্রেনের নিরাপত্তার গ্যারান্টি ছাড়া যুদ্ধ বন্ধ করা আদতেও সম্ভব নয়। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিশ্চয়তা নিয়ে একটি কথাও বলেননি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি দ্রুতই এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চান। তবে ম্যাক্রোঁ বলেছেন, আমরাও চাই যুদ্ধ দ্রুতই বন্ধ হোক। তবে আমরা এমন কোনো চুক্তি চাই না যা দুর্বল।
তবে দুই নেতা একটা বিষয়েই একমত, তা হলো, যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার পরই ইউক্রেনে ইইউ-র শান্তিরক্ষী বাহিনী থাকবে। ম্যাক্রোঁ বলেন, শান্তিরক্ষীরা সীমান্তে থাকবে না। তারা শুধু এটুকু ঠিক করবে যে, যাতে শান্তি বজায় থাকে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আমি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেছেন, এটা নিয়ে তার কোনোই সমস্যা নেই।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে আলোচনা শুরু হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে কী আর নির্ভরযোগ্য বন্ধু হিসেবে ভাবা ঠিক হবে? ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন ও তিনি যেভাবে বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এরপর এই আলোচনা আরও গতি পেয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org