দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) হতে চীনা কিছু পণ্যের ওপর ১০৪ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করা হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সোমবার চীনের পাল্টা শুল্কের জবাবে আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এতে করে দেশটির ওপর মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ১০৪ শতাংশ।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জানিয়েছেন যে, বুধবার থেকেই চীনের ওপর ‘চমকপ্রদ’ এই শুল্ক কার্যকর হবে।
ইতিপূর্বে চীন এই শুল্কের তীব্র সমালোচনা করেছিল। নতুন করে আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপকে ‘ভুলের ওপর ভুল’ হিসেবে অভিহিত করে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি চীনের ওপর ১০৪ শতাংশ শুল্ক কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করার পরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে আবারও দরপতন শুরু হয় বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম সিএনএন। এতোদিন বাজার ইতিবাচক ছিল।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রাথমিকভাবে সব চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মূলত ফেনটানিল নামে একটি মাদকের প্রবেশ ঠেকাতে এই শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন তিনি। তারপর এটি বাড়াতে বাড়াতে ১০৪ শতাংশ করেছেন তিনি। সিএনএন জানিয়েছে যে, গড়ে এখন চীনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য পাঠাতে প্রায় ১২০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে।
গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহৎ আমদানিকারক দেশই ছিল চীন। দেশটি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করেছিল ৪৩৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। অপরদিকে তারা চীনে রপ্তানি করেছিল ১৪৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। দুই দেশের মধ্যকার এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে অভ্যন্তরীণ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর প্রভাবে অনেক মানুষ চাকরি হারাতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org