দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি গরমে সুস্থ থাকতে ভরসা রাখতে হয় তাজা ফলের উপর। গ্রীষ্মকালীন ফল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারীও। তরমুজ, শসা, জামরুল, জামের মতো ফল দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। কিন্তু দুপুরে ভাত খাওয়ার পর কী ফল খাওয়া ক্ষতিকর?

প্রতিদিন ফল খেলে ত্বকের জেল্লা বাড়ে ও ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে দিনের কোন সময় ফল খেলে বেশি উপকার পাবেন, তা অনেকেই কিন্তু জানেন না। বিশেষ করে দুপুরে ভাত খাওয়ার পর কী ফল খাওয়া ক্ষতিকর?
অনেকেই লাঞ্চের পর ফল খান, আবার কেও ডিনারেও পাতে রাখেন ফল। তবে দিনের যখন-তখন ফল খেলেই হবে না। সঠিক সময় ফল খেলে তবেই দেহে উপকারিতা পাওয়া যাবে।
এই সম্পর্কে পুষ্টিবিদ শ্রেয়সী ভৌমিক বলেছেন, ‘ফলের মধ্যে শরীরকে ডিটক্সিফাই করার ক্ষমতাও রয়েছে। ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর হয়ে থাকে ফল। তাই ফল নির্দিষ্ট সময়ই খাওয়া উচিত।’ যেমন ভারি খাবার খাওয়ার পর একেবারেই ফল খাওয়া উচিত হবে না। দুপুরের খাওয়া শেষ করার পর, একবাটি ফল খেলে বদহজম হতে পারে। তখন গ্যাস, অ্যাসিডিটির সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এমনকি পেটের পিএইচ স্তরের ভারসাম্যও নষ্ট হয়।
শ্রেয়সী ভৌমিকের সংযোজন, ‘সূর্যাস্তের পরও কখনও ফল খাবেন না। রাতে ফল খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়েও যেতে পারে ও দেহে শক্তি উৎপন্ন হয়। যে শক্তি কাজ করার জন্য সকালবেলায় দরকার, সেটা রাতে তৈরি হলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।’ আবার অনেকেরই রাতে ফল খেলে বদহজমও হয়। সেই ক্ষেত্রে সন্ধ্যার পর ফল না খাওয়াই ভালো।
কারণ ফল খালি পেটে খেলে সবচেয়ে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়। যে কারণে ব্রেকফাস্টে ফল রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদরা। শ্রেয়সীর ভৌমিক জানান, খালি পেটে ও ভারি খাবার খাওয়ার ৪৫ মিনিট হতে ১ ঘণ্টা পূর্বে ফল খাওয়া উচিত। সেইসঙ্গে ফল খেয়ে পেট ভরানোর কথাও ভাববেন না। বরং, মিড মিল হিসেবে ফল খাওয়া যেতেই পারে। অর্থাৎ, দু’টো ভারি খাবারের মধ্যে যে সময় তখন ফল খেতেই পারেন। যেমন- ব্রেকফাস্ট ও লাঞ্চের মাঝের সময়টিতে ফল খেলে ভিষণ উপকার পাওয়া যাবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org