দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতা (‘মিস ওয়ার্ল্ড’) এবারের আসর বসেছিলো ভারতের হায়দারাবাদে। তবে আয়োজক কর্তৃপক্ষের বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ডে অপমানিত এবং বিরক্ত হয়ে প্রতিযোগিতা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন ‘মিস ইংল্যান্ড’ মিলা ম্যাগি।

৭৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার কোনও প্রতিযোগী বিশ্বসুন্দরীর প্রতিযোগিতা হতে সরে দাঁড়িয়েছেন। এই প্রতিযোগিতা থেকে বেরিয়ে আসার কারণে আয়োজক সংস্থাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মিলা। বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো শোরগোল শুরু হয়েছে নানা মহলে।
নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, এ বছর ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতার আসর বসে হায়দরাবাদে। প্রতিযোগিতা শুরু হয় ১০ মে থেকে ও চলবে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত। এই প্রতিযোগিতার এক অন্যতম প্রতিযোগী ছিলেন ‘মিস ইংল্যান্ড’ মিলা ম্যাগি। তবে তিনি নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেছেন যে, এই প্রতিযোগিতার আড়ালে আয়োজক সংস্থাটি প্রতিযোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। রীতিমতো মানসিক শোষণ করা হয় সকলকেই।
মিলা ম্যাগি আরও বলেন, ‘যেমনিভাবে একটি বাঁদরকে নাচানো হয়, ঠিক সেইভাবেই ওখানে প্রতিযোগীদেরকে পারফর্ম করতে বাধ্য করা হয়। এখানে প্রতিযোগীদের সকাল হতে রাত পর্যন্ত ঘনঘন মেকআপ করা, পোশাক বদলানো, ইত্যাদিও করতে হয়। আমি কারও মনোরঞ্জনের পাত্রী হতে এখানে আসিনি। সে কারণে আমি প্রতিযোগিতা থেকে বেরিয়ে এসেছি।’
আয়োজক সংস্থা দাবি করেছিলো যে, বিশ্বসুন্দরীর প্রতিযোগিতা থেকে মিলার সরে দাঁড়ানোর পিছনে হয়তো ব্যক্তিগত কারণ রয়েছে। তবে সেই জল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছেন খোদ ‘মিস ইংল্যান্ড’ মিলা ম্যাগি। মিলা আরও বলেছেন, ‘মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার একটা বিশেষ মূল্যবোধও রয়েছে। তবে এই প্রতিযোগিতাটি বহু পুরোনো ধারণাতেই আটকে রয়েছে।’
এই ঘটনা সম্পর্কে গত রবিবার, তেলঙ্গানার মন্ত্রী কেটি রামা রাও তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মিলা ম্যাগির উপর হওয়া হয়রানির ঘটনায়। এমনকী দুঃখ প্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করেন তিনি। কেটি রামা রাও বলেন যে, ‘মিলা ম্যাগি, তুমি অত্যন্ত শক্তিশালী একজন নারী। আমাদের রাজ্যে এসে তোমাকে যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে, সেজন্য আমি সত্যিই দুঃখিত।’
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org