দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে যাওয়ার মধ্যেই ইসরায়েলের কাছে বিপুল পরিমাণ গাইডেড বোমা কিট বিক্রির অনুমোদন দিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

এই বিষয়ে গতকাল সোমবার (৩০ জুন) এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে যে, তারা ইসরায়েলের কাছে ৫১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের গাইডেড বোমা কিট ও সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিগত সহায়তা বিক্রির অনুমোদন দিয়েছেন। বার্তা সংস্থা আনাদোলু এই তথ্য দিয়েছে।
ডিফেন্স সিকিউরিটি কো-অপারেশন এজেন্সি (ডিএসসিএ) জানিয়েছে যে, এই সম্ভাব্য অস্ত্র বিক্রির আওতায় ইসরায়েল তিন হাজার ৮৪৫টি কেএমইউ-৫৫৮বি/বি জয়েন্ট ডাইরেক্ট অ্যাটাক মিনিশন (জেডিএএম) গাইডেন্স কিট পাবে যা বিএলইউ-১০৯ বোমায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এছাড়াও ৩ হাজার ২৮০টি কেএমইউ-৫৭২ এফ/বি জয়েন্ট ডাইরেক্ট অ্যাটাক মিনিশন (জেডিএএম) কিটও পাবে ইসরাইল যা এমকে-৮২ বোমায় ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়াও থাকবে প্রকৌশল, সরবরাহ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা।
এই অনুমোদন এমন একটি সময় এলো, যখন গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি হামলার কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে প্রাণহানি। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর হতে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত হয়েছেন অন্ততপক্ষে ৫৬ হাজার ৫০০ জন ফিলিস্তিনি, যাদের বেশিরভাগই ছিলো নারী এবং শিশু।
শুধু সোমবারই ইসরায়েলি বিমান এবং কামান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯৭ জন। ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তুই ছিল বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়স্থলসহ জনবহুল এলাকা।
এই প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলকে মার্কিন সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সমালোচনা তীব্র আকার ধারণ করে। অনেক মানবাধিকার সংগঠন এবং বিশ্লেষক এই সহায়তাকে ‘যুদ্ধাপরাধে নৈতিকভাবে যুক্ত থাকার নামান্তর’ বলেও অভিহিত করেছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org