দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের ১৯ তারিখে একটি আন্তঃনক্ষত্রীয় ধূমকেতু- 3I/ATLAS পৃথিবীর নিকট দিয়ে নিরাপদ দূরত্বে (প্রায় ১.৮ অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল ইউনিট) ট্রানজিট করে।

এটি এমন বিরল ঘটনা, কারণ এটি আমাদের সৌরজগতের বাইরের কোনো নক্ষত্র থেকে আগত মাত্র তৃতীয় ধূমকেতু, যার মতো কেবল ‘ওউমুয়াamua’ ও ‘২I/বোইরিসভ’ প্রথম দেখা গিয়েছিল।
এই ধূমকেতুটি অন্যান্য নক্ষত্রীয় বস্তু থেকে এসেছে, যার কক্ষপথ ও গতি বিশ্লেষণ থেকে জানা গিয়েছে এটি আমাদের সৌরজগতের বাইরের কোনো জায়গা থেকে আসা- যেখানে তার সৃষ্টি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলেন, এর ধোঁয়া এবং গ্যাস নির্গমন সূর্যের তাপের সঙ্গে ক্রিয়া করে একটি উজ্জ্বল চাপ ছেড়ে দেয়, যা পর্যবেক্ষণযোগ্য হয় পৃথিবীর দূরদর্শী দ্বারা।
এই ধরনের ধূমকেতু খুব কমই পর্যবেক্ষণে আসে। ২০১৭ সালে ‘ওউমুয়াamua’ এবং ২০১৯ সালে ‘২I/বোইরিসভ’ এ-ধরনের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধূমকেতু হিসেবে শনাক্ত হয়েছিল। 3I/ATLAS-এর নিকটতম পারাপারের সময় বিজ্ঞানীরা এটির গঠনতত্ত্ব, আকার, গতি এবং রসায়ন জ্ঞান সংগ্রহের সুযোগ পেয়েছেন যা আমাদের সৌরজগত ও বাইরের নক্ষত্রীয় পরিবেশ সম্পর্কে নতুন তথ্য দেবে।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, আন্তঃনক্ষত্রীয় বস্তুর নজিরিত উপস্থিতি আমাদের গ্রহের “শান্ত” মহাকাশ পটভূমির ভাবনাকেই পালটাচ্ছে- এবং এটি মানবসমাজের মহাকাশে অজানা রহস্যকে আরও উন্মোচন করতে পারে।
কেনো এটি আশ্চর্যজনক?
পৃথিবীর বাইরেই তার জন্ম, এবং এমন অনুপস্থিতিজনিত বস্তু দ্রুত গতিতে আমাদের নিকটে পাড়ি দিয়ে যাচ্ছে। এমন ঘটনা খুব বিরল, তাই এটি ২০২৫ সালের মহাকাশ বিজ্ঞানের এক অন্যতম বিস্ময়কর খবর। সূত্র: Space
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org