দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোরবানীর গরুর হাট এখনও শুরু হয়নি। প্রতিবছর কোরবানীর অন্তত এক মাস আগে থেকেই গরু হাটের তোড়-জোর শুরু হলেও এবার একেবারেই নীরব।
যানজট নিরসনে রাস্তায় যাতে গরুর হাট না বসানো হয় সেজন্য উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটি করপোরেশনকে অনুরোধ করেছে ঢাকা মেট্রো পলিটান পুলিশ। গতকাল ডিএমপি এই আহ্বান জানিয়েছে।
অপরদিকে এবারের গরু হাটের নিরুত্তাপ পরিস্থিতিতে এ সম্পর্কে কথা হয়েছে কয়েক জন গরু ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তারা বলেছেন, গতবছর গরুর দাম পড়ে যাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী লাখ লাখ টাকা লোকসান গুণেছেন। যে কারণে অনেক ব্যবসায়ী এবার কোরবানীর গরুতে বিনিয়োগ থেকে সরে থাকবেন বলে মনে হচ্ছে। তার আগের বছর অতিরিক্ত মুনাফা করার কারণে অনেক ব্যবসায়ী গত বছর বিনিয়োগ করেছিলেন। আর তখন তারা একেবারে দাম না পেয়ে লোকসান গুণেছেন। আর তাই এবার পুজি হারানোর ভয়ে ভীত অনেকেই। আর তাছাড়া এক বছর বাজার খারাপ গেলে পরের বছর ভালো যায়। সেই হিসেবে এবার বাজার ভালো হওয়ার কথা থাকলেও তেমন একটা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। সীমান্তে কড়াকড়ি থাকায় ভারতীয় গরুও আমদানি হচ্ছে না বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বাংলাদেশে কোরবানি মৌসুমে গরুর হাটে দাম ওঠানামা করে মূলত ভারত থেকে আনা গরুর ওপর। বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, হিলি, বাংলাবান্দা, তামাবিল, গোবরাকুড়া-কড়াইতলা, বুড়িমারি, ফেনীর বিলোনিয়া বন্দর হয়ে এবং সীমান্তবর্তী জেলা যশোর, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, জয়পুরহাট, লালমনিরহাট, ময়মনসিংহ, গাইবান্ধা, নেত্রকোনা, শেরপুর, সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন করিডোর ও সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বৈধ পথে গরু আসে। এছাড়া অবৈধ পথে বিপুলসংখ্যক গরু বাংলাদেশে প্রবেশ করে। চুয়াডাঙ্গা জেলার কার্পাসডাঙ্গা ও কুর্দা করিডোর, রাজশাহীর গোদাগাড়ির মহিষালবাড়ী, সুলতানগঞ্জ করিডোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনাইডন্ডি, নওগাঁর চৌবাড়িয়াসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে রোজার ঈদের পর থেকেই গরু আসতে শুরু করে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের মতে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন।
কোরবানীর গরুর হাটগুলো এখনও এমন গরুশূন্য
ব্যবসায়ীরা আরও বলেছেন, রাজশাহীতে গরুর বড় মোকাম গোদাগাড়ীর মহিষালবাড়ী, মহানগরীর সিটিহাট, বানেশ্বর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনাইচণ্ডী, নওগাঁর চৌবাড়িয়াহাট ঈদের অন্তত দুই মাস আগ থেকে ভারতীয় গরুতে ভরপুর হয়ে ওঠে। আগ থেকেই গরু আসা শুরু হয়। কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। রোজার ঈদের পর থেকেই এসব হাটে গত এক মাস থেকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে গরু আসার হার একেবারেই কমে গেছে। স্বাভাবিক সময়ে যে হারে গরু আসে এখন তার চেয়েও কম গরু আসছে।
এমন পরিস্থিতির কারণে গরু ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এবার কোরবানীর গরুর ব্যবসা মন্দা দেখা দিতে পারে। যার লক্ষণ ইতিমধ্যেই দেখা গেছে। পরিস্থিতি যায়ই হোক কোরবানীর গরু আমদানি ও বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এটাই সকলের প্রত্যাশা।