দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ধর্ষণ বলতে আমরা বুঝি মেয়েদের যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া। কিন্তু আদতে তা ঠিক নয়। যেকোন মানুষের যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া ধর্ষণ। পুরুষ ও ছেলেরাও ধর্ষণের শিকার হয়। কিন্তু এটা প্রকাশিত হয় কম।
ধর্ষণ একটি ঘৃণ্য অপরাধ। ধর্ষক সমাজের নিকৃষ্টতম মানুষ। এদের নজর থাকে যৌন নির্যাতনের দিকে। সে নারী হোক অথবা পুরুষ। আমাদের সমাজে যদিও নারীদের যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয় বেশি, কিন্তু এর প্রতিকারে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তাই অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হতে ধর্ষককে ঝুঁকি নিতে হয়। আর তখনি সে বেছে নেয় পুরুষ অথবা ছেলেকে।
আবার অনেক বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষের পছন্দই সমকামিতা। যার কারণে তার যৌন আকাঙ্ক্ষা গুলো চরির্তার্থ করতে পুরুষ বা ছেলেকে বেছে নেয়। এজন্য সে বেছে নেয় নম্র ও ভদ্র মানুষদের যারা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে করা এই অসামাজিক কাজের জোর প্রতিবাদ করতে পারবে না। সে বিভিন্ন ভাবে তাদেরকে ঋণী করে ফেলে। আর চরির্তার্থ করে তার কালো মনের বাসনা।
ধর্ষণের শিকার পুরুষ ও ছেলেরা এই ব্যাপারটি সযত্নে লুকিয়ে রাখে। লজ্জা, ঘৃণা আর অপমানে সে কাউকেই এই ঘটনার কথা বলতে পারে না। ধর্ষণ সমাজে মেয়ে সম্পর্কিত ব্যাপার হওয়ায় তার নিজেকে ছেলে ভাবতে কষ্ট হয়। এটা তার পুরুষত্বের উপর প্রচণ্ড আঘাত। ছেলেটি মানসিক ভাবে খুব আঘাতপ্রাপ্ত হয়। ঘটনার প্রভাব থেকে যায় অনেক বছর পর্যন্ত। এমনকি আজীবনও তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। একা একটি কষ্ট বুকের মাঝে চেপে রেখে জীবন কাটানোর বেদনা যদি কেউ বুঝে তবে তাকে শিহরিত হতে হবে।
আপনাদের একটি মুভির কাহিনী বলি। মুভিটির নাম Mystic River। এতে শন পেন ছোট বেলায় যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। যার কারণে সে বড় হয় অসহ্য মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে। বড় হয়ে সে খুন খারাবিতে মেতে উঠে। খুন করে তার নির্যাতনকারীকে।
পুরুষ ও ছেলেদের ধর্ষণ থেকে বাঁচার উপায়ঃ
আপনি যতই নরম স্বভাবের হোন না কেন, ধর্ষণের ব্যাপারে খুব শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে। এর কঠিন প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ঐ বিকৃত মানুষের কুকৃত্তি ফাঁস করে তার শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তাকে ছেড়ে দিলে সে অন্য কারো সাথে একই কাজ করবে।
আপনি মেয়ে নন ভেবে এটিকে প্রশ্রয় দিলে আজীবন আপনাকে একটি ক্ষত নিয়ে বাঁচতে হবে। আপনার মানসিকতার চূড়ান্ত ক্ষতি সাধন হবে। যা আপনি বুঝতে পারবেন আরো অনেকটা সময় পরে।
আপনি যদি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন তবে তা বিশ্বস্ত কারো সাথে শেয়ার করুন।
বাবা-মাকে মেয়ে সন্তানের পাশাপাশি ছেলে সন্তানের নিরাপত্তার দিকটা ভাবতে হবে। এই একটি ঘটনা আপনার ছেলে সন্তানের মন মানসিকতা নষ্ট করে দিতে পারে।
অবশেষে বলতে চাই কোমল মতি শিশুদের কথা। ছেলে হোক অথবা মেয়ে হোক, তাকে যাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে না হয় সেদিকে আমাদের সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আপনি পাবলিক গাড়িতে চড়লে একটু খেয়াল রাখুন কোন শিশুকে সেখানে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে কিনা। আপনি শিক্ষক হলে আরো সতর্ক ভাবে খেয়াল রাখুন। কারণ তারা আপনারই সন্তান। সর্বোপরি আপনি যে পেশারই হোন না কেন আপনার আশেপাশের শিশুদের দিকে একটু নজর রাখবেন। শিশু গুলো এই চাপা কষ্ট কাউকে বলতে পারবে না, একা একা বয়ে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ডানকান ক্রেইগ ছেলেদের ধর্ষণের ব্যাপারে কিছু কথা বলেছেন। ভিডিওটি দেখুন…
সূত্রঃ telegraph