দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাজধানী ঢাকাতে যতগুলো হাসপাতাল রয়েছে সেখানে গেলে দেখতে পাবেন লোকে লোকারণ্য। অথচ এর ব্যতিক্রমি একমাত্র হাসপাতাল সেটি হলো ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল। এই হাসপাতাল নাকি রোগী খুঁজছে! এমন খবর এসেছে বেশ কিছু পত্র-পত্রিকায়।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালটি হোটেল রেডিসনের বিপরিতে অবস্থিত। কিন্তু ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় হওয়ায় নানা সিকিউরিটির মধ্য দিয়ে সেখানে যাওয়া লাগে। তারপর রিকশা যাওয়া নিয়েও রয়েছে প্রতিবন্ধকতা। এমন নানান জটিলতার কারণে এই হাসপাতালটি প্রায় জনমানবশূন্য। সকালে আউট ডোরে কিছু লোক হয়। কিন্তু বেলা গড়ালে আর এখানে থাকে না কেও। তখন এটি হাসপাতাল বলে মনেই হবে না।
এতো সুন্দর একটি পরিবেশে হাসপাতালটি গড়ে উঠেছে। আশে-পাশের পরিবেশ খুবই সুন্দর। তাছাড়া হাসপাতালের ফটক থেকে শুরু করে ভেতরেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। মোজাইক মেঝে। লিলফট রয়েছে কযেকটি যদিও সবগুলো এখনও চালু হয়নি। সিঁড়িগুলো প্রসস্থ। চলাচল করেও সুবিধা। রয়েছে বিশ টাকার টিকেট কিনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে রোগী দেখানোর সুবিধা। অন্যান্য প্যাথলজি টেস্টের দরও অনেক কম। বাইরে যেখানে আলট্রাসনো করতে লাগে ৬/৭ শ’ টাকা সেখানে এই কুর্মিটোলা হাসপাতালে লাগে মাত্র ২শ’ টাকা। এমনিভাবে ওয়ানকার প্রতিটি প্যাথলজি টেস্টের দর অনেক কম।
জানা যায়, সব রোগীরা এ হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে ওষুধও পান। ভর্তি হওয়া রোগীদের বিনামূল্যে খাবারও সরবরাহ করা হয়ে থাকে। রোগীদের বসার জন্য রয়েছে থরে থরে সাজানো আধুনিক চেয়ার। খোলা-মেলা জায়গা। এসব সুযোগ-সুবিধা নিতে নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত উভয় শ্রেণীর রোগীদের এখানে ভিড় করার কথা। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভিআইপি রোড আবার ক্যান্টনমেন্টের সিকিউরিটি সব মিলিয়ে এখানে সাধারণ রোগীদের আসা এক সমস্যা।
অন্যান্য সমস্যাও রয়েছে। হাসপাতালের সব বিভাগ ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকার কথা থাকলেও দুপুর ২টার পরই জরুরি বিভাগ ছাড়া অন্য রোগীদের এখানে আর দেখা যায় না। কারণ ল্যাবে টেস্টের নিয়ম করা রয়েছে দুপুরের আগেই করাতে হবে। এমন কিছু অনিয়মের কারণেও অনেক রোগি বিমুখ হচ্ছেন।
মাত্র ১০ টাকায় টিকিট কেটে (বহির্বিভাগে) ব্যবস্থাপত্রসহ বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়া যায়। অপরদিকে অন্তঃবিভাগে টিকিটের মূল্য ১৫ টাকা। ১২ তলা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটির শয্যা ৫০০টি। তবে চালু আছে বহির্বিভাগে মাত্র ৯৫টি শয্যা। শীঘ্রই এটি ২০০ শয্যায় উন্নত করার কাজও চলছে বলে জানা যায় সংশ্লিষ্ট সূত্রে। পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য মোট ৮টি ওয়ার্ড চালু রয়েছে।
হাসপাতালটির বহির্বিভাগ ও অন্তঃবিভাগে মেডিসিন, সার্জারি, অর্থোপেডিক সার্জারি, গাইনি, শিশু, চক্ষু, নাক-কান-গলা, চর্ম ও যৌনরোগ, ডেন্টাল, মানসিক রোগ, ইউরোলজি, নেফ্রোলজি মিলিয়ে মোট ১১টি বিভাগ বর্তমানে চালু রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এখন পর্যন্ত মোট ২৮০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৮০ জন চিকিৎসক, ৭০ জন নার্স। অন্যরা বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে মোট ২৮০ জন স্টাফ রয়েছে েএই হাসপাতালে। তবে সংযুক্তিতে এই হাসপাতালে ৫০ জন সেনাবাহিনীর লোকও দায়িত্বে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ভাষাণটেক, মানিকদী, সাভার, মহাখালী, খিলক্ষেত, নিকুঞ্জ, উত্তরা, টঙ্গী, গাজীপুর এলাকার মানুষের চিকিৎসা সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে ২০১২ সালের ১৩ মে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন।