দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। জাতির গৌরবোজ্জল দিন। ১৯৭১ সালে নয় মাসের এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছিলাম স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশ। জাতি আজ নতুন করে দৃপ্ত শপথ নিয়েছে পতাকার মান রক্ষার জন্য।
আজ সেই বিজয়ের মহান দিন। বিজয়ের ৪২তম বার্ষিকী পূর্ণ করলো জাতি। এবার বিজয়ের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ছিল যুদ্ধাপরাধীর বিচার ফাঁসি কার্যকর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর ও তাদের দোষরদের দ্বারা যারা সেসময় নির্মম পাশবিকতার শিকার হয়েছিলেন। জীবন দিয়েছিলেন রাজাকার, আলবদর, আলশামস্দের হাতে। এবার তাদের বিচার শুরু এবং কার্যকরের মাধ্যমে জাতি সে কলঙ্ক মোচন করতে যাচ্ছে। তাই বলা যায় এবারের বিজয় দিবস এক নতুন আঙ্গিকে পালন হচ্ছে। যদিও একাত্তরের পরাজিতরা সারাদেশে এখনও আস্ফালন চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরও বলতে হবে এবারে বিজয় দিবস বাংলাদেশের ইতিহাসের এক বিশেষ বিজয় দিবস।
আজ প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান বিজয় দিবসের সূচনা করা হয়। আজ সরকারি ছুটি। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে সূর্যদয় থেকে শহীদদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ জনতার ঢল নেমেছে। দেশব্যাপী আজ বিভিন্ন ভবনের ছাদে উড়বে আমাদের গর্বের জাতীয় পতাকা।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া পৃথক বাণী দিয়েছেন।
ফিরে দেখা ১৯৭১
১৭৫৭ সালে পলাশীর আম্রকাননে স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল তার আবার উদয় ঘটে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মাধ্যমে। বিজয়ের মহামুহূর্তটি সূচিত হয়েছিল আজকের এই দিনে ১৬ ডিসেম্বর। আজকের এই দিনে ৯১ হাজার ৫৪৯ পাকিস্তানি সৈন্য প্রকাশ্যে আত্মসমর্পণ করেছিল ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে যেটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী মিত্র বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের সর্বাধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেছিলেন আজকের এই মহান দিনে। আর এই বিজয়ের মহানায়ক হিসাবে যিনি ইতিহাসে চির অম্লান ও ভাস্বর হয়ে রয়েছেন তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আজ সেই মহান দিবসে জাতি স্মরণ করছে সেই সব মুক্তিযোদ্ধাদের যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল আমাদের মহান বিজয়। আজ আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক। আমাদের একটি পতাকা রয়েছে। আমাদের একটি পতাকা রয়েছে। বিশ্ব মানচিত্রে রয়েছে আমাদের স্থান। সেই মহান বিজয় দিবস আজ জাতি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছে। যদিও এবারে বিজয় দিবসের আগের দিনও একাত্তরের পরাজিত শক্তিদের আস্ফালন আমাদের পুরো জাতিকে ব্যথিত করেছে। তবুও এই বাঙালি জাতিকে কোন দিন দমানো যায়নি আজও যাবেনা। বাঙালি জাতি প্রয়োজনে আবারও এদেশের পতাকা রক্ষার জন্য রাস্তায় নেমে আসবে, প্রয়োজনে আবার জীবন দেবে। তবুও লক্ষ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে, লক্ষ লক্ষ জীবনের বিনিময়ে যে দেশ আমরা স্বাধীন করেছিলাম সেই স্বাধীনতার বিজয়কে আমরা অম্লান হতে দেবো না। পুরো জাতি আজ এই ২০১৩ সালের মহান বিজয় দিবসে নতুন করে অঙ্গীকার করছে।
কি অপূর্ব সুন্দর ছবিটি! ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য হলেও আমাদের হানাহানি ভেদাভেদ ভুলে, একতা বদ্ধ হয়ে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে হবে।
***ছবিটির সকল কৃতিত্ব বাচ্চাটির পরিবারের(এবং বাচ্চাটির), এই অসাধারণ ধারণার জন্য আমরা তাদের জানায় ধন্যবাদ!
দি ঢাকা টাইমস্-এর পক্ষ থেকে ১৯৭১এ যাঁরা জীবনের বিনিময়ে এদেশের বিজয় এনে দিয়েছিলেন তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং মহান বিজয় দিবসে দেশবাসীদের জানাচ্ছে আন্তরিক অভিনন্দন।