ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের নদ-নদীগুলোর পানি বাড়তে শুরু করেছে। আষাঢ় মাস আসতে না আসতেই এই পানি বৃদ্ধি পাওয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। কয়েকদিনের বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি অব্যাহতভাবে বাড়ছে।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, কয়েকদিনের বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার নদীর পানি এখনও বিপদসীমার কিছুটা নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ নিচু এলাকাগুলো ডুবে গেছে। পানিতে ডুবে যাওয়ায় ওইসব এলাকায় পাটসহ বিভিন্ন শাকসবজির ক্ষেতে এখন পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ৭০ সে.মি ও তিস্তার পানি ৬০ সে.মি এবং যমুনার পানি ৬৫ সে.মি বৃদ্ধি পেয়েছে।
গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, চণ্ডিপুর, হরিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলগুলোতে পানি উঠেছে। ইতিমধ্যে নিজামখাঁর চর, চর খোর্দ্দা, বেলকা নবাবগঞ্জের চর, কানি চরিতাবাড়ি, চর চরিতাবাড়ি, উজান বুড়াইল, ভাটি বুড়াইল, চর বিরহীম, লাল চামার চর, চর ভোরের পাখি, ফকিরের চর, কালাই সোতার চর, কেরানির চর ডুবে গেছে।
অপরদিকে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, মোল্লারচর ও গিদারী, ফুলছড়ির গজারিয়া, কাতলামারী, ফজলুপুর ও উড়িয়া ইউনিয়ন এবং সাঘাটার ভরতখালী, হলদিয়া, ঘুড়িদহ ও সাঘাটা সদর ইউনিয়নের ৩৭টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, পানিবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফুলছড়ির রতনপুর, কাতলামারী, উড়িয়া, জিয়াডাঙ্গা এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দুই দিনে ওইসব এলাকায় ৭০টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া গত এক সপ্তাহে প্রায় ৫৫০টি বাড়িঘর যমুনাগর্ভে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বলে উড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ সরকার জানিয়েছেন। এদিকে ১৯ জুন সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পরিচালন ও সংরক্ষণ) দেয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনায় ১৫ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। পানি এখনও বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার পানি বাড়ায় আগামী ৪ থেকে ৭ দিনের মধ্যে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশংকা রয়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরই) একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ইতিপূর্বে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনায় পানির বিপদসীমা ১৩ দশমিক ৭৫ মিটার নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষাবাঁধ হার্ড পয়েন্টে পরপর দু’বছর ধস নামায় অগ্রিম সংরক্ষণের প্রয়োজনে বিপদসীমা দশমিক ৪০ মিটার কমিয়ে ১৩ দশমিক ৩৫ মিটারে নির্ধারণ করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৯ জুন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক বললেও জেলার চরাঞ্চল প্রধান চৌহালীতে যমুনায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে।
এদিকে আমাদের ঈশ্বরদী প্রতিনিধি জানিয়েছে, পদ্মার পানি বিপদ সীমার নিচে থাকলেও প্রতিদিনই পানি বাড়ছে। এখনও পানি বাড়ার কারণে ফসলের কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টের অবস্থাও রয়েছে অপরিবর্তিত।