ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার মোবাইল ফোনে সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে ‘আচরণগত রোগব্যাধির ঝুঁকি’ নিরূপণে স্বাস্থ্য অধিদফতর পরিচালিত ব্যতিক্রমধর্মী পরীক্ষামূলক জরিপ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উদ্যোগে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ মে পর্যন্ত পরিচালিত জরিপ কার্যক্রমে ৩ হাজার ৩৮৬ প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়।
জানা যায়, সাক্ষাৎদাতাদের কাছ থেকে অসংক্রামক ব্যাধি, ইনজুরি ও প্রতিরোধযোগ্য রোগব্যাধি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। সাক্ষাৎদাতাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ পুরুষ ও এক-তৃতীয়াংশ নারী। তারা সবাই মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিঙ্কের গ্রাহক। সাক্ষাৎ দেয়ার আগ পর্যন্ত তারা কমপক্ষে এক বছর রাজধানীতে বসবাস করছেন এবং সবার বয়স ১৮ বছরের ওপরে। মোবাইল ফোনে প্রশ্নোত্তর পদ্ধতির স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি জরিপের এ কার্যক্রমে নগরবাসীর কাছ থেকে আশাব্যঞ্জক বিপুল সাড়া পাওয়া গেছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক প্রফেসর ডা. মাহমুদুর রহমান নগরবাসীর ব্যাপক সাড়া প্রদানের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন, বিহেভিয়ারেল রিস্ক ফ্যাক্টর সার্ভিলেন্স সিস্টেম (বিআরএফএসএস) সাক্ষাৎকারদাতাদের শতকরা ৭০ ভাগ স্বেচ্ছায় রোগব্যাধি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য দিয়েছে। তিনি জানান, জরিপ কার্যক্রমের যথার্থতা নিরূপণের লক্ষ্যে ১০ জুন থেকে পৃৃথক ৪টি টিম সাক্ষাৎদাতাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে আরেক দফা মুখোমুখি (ফেইস টু ফেইস) সাক্ষাৎকার গ্রহণ করছে। মোবাইল ফোনে দেয়া উত্তরের সঙ্গে সরজমিনে পরিদর্শনকালীন সময়ে দেয়া উত্তরে তারতম্য রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যথার্থতা নির্ণয়ের জন্য ৩৪৫ জনকে টার্গেট করা হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত ১২০ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়ে গেছে। তিনি বলেন, দুইভাবে নেয়া সাক্ষাৎকারে পার্থক্য না থাকলে জরিপ কার্যক্রম বৈজ্ঞানিকভাবে সফল বলে পরিগণিত হবে। পরে পর্যায়ক্রমে সারাদেশে মোবাইল ফোনে সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে আচরণগত রোগব্যাধির ঝুঁকি নিরূপণ কার্যক্রম শুরু হবে।
জানা গেছে, এ ধরনের জরিপ সফল হলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাক্ষাৎকার গ্রহণের আর প্রয়োজন হবে না। কম খরচে খুব সহজেই সারাদেশে রোগব্যাধির ঝুঁকি নিরূপণ সম্ভব হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। জানা গেছে, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ন্যাশনাল পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের (আইএএনপিএইচএ) অর্থায়ন ও সিডিসি আটলান্টার আর্থিক সহযোগিতায় এ জরিপ কার্যক্রম ব্যয় মেটানো হয়। উন্নত বিশ্বে বহু বছর থেকেই এ ধরনের জরিপের মাধ্যমে অঞ্চলভিত্তিক রোগব্যাধির ঝুঁকি নিরূপণ ও সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে করে এলেও বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ ধরনের পরীক্ষামূলক জরিপ পরিচালিত হয় ।
আইইডিসিআর সূত্রে জানা গেছে, বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে প্রণীত প্রশ্নমালার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কয়েকটি রোগব্যাধি : জ্বর, ডায়রিয়া, ইনজুরি, ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার ও হূদরোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
উল্লেখ্য, এতে রোগ নির্ণয় যেমন সহজ হবে, তেমনি এ বিষয়ে সরকারকে জানানো যাবে। যাতে করে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।