দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত এক সপ্তাহের বেশি সময় এরশাদের কোন খবর পাওয়া যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন এরশাদ কি এখনও হাসপাতালে? নাকি কোন সমঝোতার মাধ্যমে গোপনে বাসায় চলে এসেছেন? অপরদিকে নির্বাচন এখনও অক্টোপাসের মতই এরশাদকে আকড়ে ধরে আছে।
এমন সব প্রশ্ন এখন জনমনে উকি মারছে। অবশ্য জাতীয় পার্টির এক নেতা সাংবাদিকদের কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, এরশাদ এখনও হাসপাতালেই আছেন। কিন্তু গত এক সপ্তাহে পত্র-পত্রিকাতেও তেমন কোন সংবাদ আসছে না। মনে হচ্ছে এরশাদ হঠাৎ করেই ডুব দিলেন।
আবার অনেকেই মনে করছেন, যেহেতু নির্বাচন একদন সন্নিকটে তাই এরশাদ চুপচাপ আছে। অবস্থা বুঝে আবার জানান দেবেন। তবে যে যায়ই বলুক, এরশাদের মতি-গতি বোঝা বড়ই কঠিক এক কাজ। কখন এরশাদের কি মতি-গতি হয় তার কোন ঠিক-ঠিকানা নেই।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের কিছু বলার জন্য ডেকে নিয়ে অনেকক্ষণ বসিয়ে রেখে তিনি কেটে পড়েন। এই নিয়ে অনেক লেখা-লেখিও হয়েছে। কেনই বা সাংবাদিকদের ডাকলেন আর কেনই বা তিনি আবার সটকে পড়লেন সেটিও এক রহস্যজনক বিষয়।
অপরদিকে রওশন এরশাদ সিএমএইচে এরশাদের সঙ্গে দেখা করার পরও তেমন কিছু সাংবাদিকদের তিনি বলেননি। রওশন এরশাদের কিছু বক্তব্য সংবাদ মাধ্যমে এলেও তা ভাষা ভাষা ভাবেই এসেছে।
অপরদিকে একজন ব্যক্তি শুধু এরশাদের বিষয়টি সব সময় ক্লিয়ার করেছেন তিনি হলেন, এরশাদের ভাই জিএম কাদের। তিনি মন্ত্রীত্ব ছেড়েছেন এবং এরশাদ এই সরকারের সঙ্গে নির্বাচনে নেই সেটিও একাধিকবার বলেছেন।
নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে এরশাদ আগেই বলেছেন, সব দল ছাড়া আওয়ামী লীগের সাথে নির্বাচনে গেলে জনগণ বেঈমান বলবে। আর যদি নির্বাচনে না যাই, তাহলে দেশে একতরফা নির্বাচন হবে। সে সরকার এক বছর কিংবা তারও বেশি সময় থাকতে পারে। সরকার পরিবর্তনের উপায় হচ্ছে তিনটি। একটা হলো নির্বাচন, দ্বিতীয়টি মিলিটারি ক্যু এবং অপরটি আর্মড রেভ্যুলেশন। প্রশ্ন হলো- জনগণ কোনটা বেছে নেবে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি আর মহাজোটে নেই। এমন সব বক্তব্য দিলেও এক এক সময় এক এক বক্তব্য এসেছে এরশাদ তথা জাতীয় পার্টির নেতাদের মুখ থেকে।
অপরদিকে কাজী জাফর আহমেদ নতুন কমিটি করে আরেক বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। এরশাদ বলছেন, তিনিই জাতীয় পার্টির আসল চেয়ারম্যান আর কাজী জাফর আবার তা অস্বীকার করে নিজের মতো করে চলার চেষ্টা করছেন। এমন এক পরিস্থিতিতে এরশাদের জাতীয় পার্টি ভেঙ্গে আরও খণ্ড হচ্ছে।
এখন পরিস্থিতি যায়ই হোক। আগামী নির্বাচনে এরশাদের জাতীয় পার্টি ইতিমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৯টি আসন পেয়েছে। নির্বাচন করবো না মুখে বললেও নির্বাচনের জালে আটকা পড়েছেন এরশাদ। এখন তিনি হয়তো হাসপাতাল অথবা যেখানেই থাকুন না কেনো ‘সরকারি’ নির্বাচন তাকে পিছু ছাড়ছে না। তবে সবকিছু পরিষ্কার হবে নির্বাচনের পর যখন সাংসরা শপথ নিবেন তখন। এখন জনগণ সে অপেক্ষাতেই আছে। দেখা যাক এরশাদের ভবিষ্যত রাজনীতি কোন পথে ধাবিত হয়।