দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যে বয়সে পড়া-লেখা করার কথা সে বয়সে বোমা বানানোর কারিগরে পরিণত হয়েছে এমন কিছু কিশোর পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। বেরিয়ে এসেছে এক লোমহর্ষক কাহিনী। সমাজের এই অসঙ্গতিপূর্ণ কাহিনী রয়েছে আজকের চিত্র-বিচিত্র বিভাগে।
ওদের বয়স খুবই কম, ওরা কিশোর। বয়স হবে সতের বা আঠারো। এই বয়সে তাদের স্কুল বা কলেজে পড়ার কথা সে বয়সে তারা নেমেছেন এক জঘণ্যতম কাজে। তারা এখন পেট্রোল বোমা তৈরির কারিগর! তাদের কাছে আসে পেট্রোল বোমা তৈরির অর্ডার। আর সেই মোতাবেক বোতল দিয়ে তৈরি করে পেট্রোল বোমা। আর একটি পেট্রোল বোমা তৈরির জন্য দেয়া হয় ১ হাজার টাকা। ছবিরএই দুই কিশোরের কাছ থেকে র্যাব ৬৫টি পেট্রোল বোমা, ৪টি ককটেল ও বোমা তৈরির মশলা উদ্ধার করেছে। গ্রেফতারকৃত এই দুই কিশোর হলো মুরাদ ও সজিবুল ইসলাম সজিব।
র্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এটিএম হাবিবুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে জানান, আদাবরের মনসুরাবাদ এলাকার বাড়ির একটি কক্ষে গতপরশু রবিবার রাতে অভিযান চালানো হয়। সেখানে ৪টি ককটেল পাওয়া যায়। বোমা তৈরি, মজুত ও সরবরাহের প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকায় এ সময় মুরাদ ও সজিবকে গ্রেফতার করে র্যাব।
পরে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাজারীবাগের শেরেবাংলা রোডে অভিযান চালানো হয়। সেখানে নির্মাণাধীন ভবনের নিচতলায় পাওয়া যায় ৬৫টি পেট্রোল বোমা ও বিভিন্ন উপাদান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা স্বীকার করে টাকার বিনিময়ে তারা বোমা তৈরি করে সরবরাহ করতো। অবশ্য তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি বলে জানা গেছে।
বোমা বিশেষজ্ঞদের মতে, উদ্ধার করা পেট্রোল বোমা শক্তিশালী এবং বিস্ফোরণ ঘটলে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশংকা ছিল। এছাড়া উদ্ধার করা উপাদান দিয়ে আরো অনেক বোমা তৈরি করা যেত। আমাদের সমাজের কিছু স্বার্থবাদিদের স্বার্থ হাসিলের জন্য আজ মানুষ হত্যার মতো এমন জঘণ্য কাজে নিয়োজিত হচ্ছে দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম।
শুধু তাই নয়, গত দুই মাসে রাজধানীসহ সারাদেশে অভিযান চালিয়ে প্রায় দেড় হাজার ককটেল ও পেট্রোল বোমা উদ্ধার করে র্যাব।
সবচেয়ে বড় একটি বিষয় আর তা হলো শিশু-কিশোরদের এ ধরনের অনৈতিক কাজে ব্যবহার করে তাদের এই কিশোর জীবনকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভয়ংকর এক পরিণতির দিকে। জাতি হিসেবে আমরা কখনও এমনটি হতে দিতে পারি না। যে বয়সে এসব শিশু-কিশোরদের লেখা-পড়ায় মত্ত থাকার কথা, সে বয়সে তারা মানুষ মারার যন্ত্রে পরিণত হচ্ছে। এমন কাহিনী যেনো আর কোন দিন আমাদের দেখতে না হয় তেমন প্রত্যাশা আমাদের সকলের।