দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খুশকি মানুষের চুলের জন্য একটি বিশেষ সমস্যা। এমন কোন মানুষনেই যার খুশকি সমস্যা নেই, কম বেশি সবাইকেই খুশকি সমস্যায় ভুগতে হয়। আজ আমাদের প্রতিবেদনে উঠে আসবে কিভাবে খুশকি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে সহজেই!
খুশকি আমাদের চুলের সমস্যার কারণে হয়না। খুশকির মূল কারণ হচ্ছে মানুষের মাথার ত্বকে। মাথার ত্বকের উপর ভাগের ঝড়ে পড়া মৃত কোষ হচ্ছে খুশকির মূল উপাদান। কারো মাথার ত্বকে খুব বেশি মৃত কোষ তৈরি হয় কারো কম। তবে যার যে পরিমানেই হোক না কেন পর্যাপ্ত পরিচর্যা এবং ব্যবস্থাপনা পারে আপনার মাথার খুশকি দূর করতে। চলুন জেনে নেয়া যাক কি কি উপায়ে আপনি আপনার খুশকি দূর করতে পারবেন।
১) চুল ধুবেন সব সময় তবে কেমিক্যাল শ্যাম্পু দিয়ে নয়ঃ
আমাদের মাথার ত্বকের মৃত কোষ প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে মাথার ত্বকে। ফলে এসব মৃত কোষ খুব বেশি জমে গেলে মাথায় চুল পড়া রোগের সৃষ্টি হতে পারে। তৈরি হতে পারে নানান ছত্রাকের। এসব থেকে বাঁচতে যা যা করতে হবে।
- মাথা এবং চুল নিয়মিত সাধারণ প্রাকৃতিক শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত বলতে প্রতিদিন ধুলে খুব ভালো।
- সপ্তাহে দুইবার খুশকি দূর করার শ্যাম্পু দিয়ে মাথা এবং চুল খুব ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
- মাথায় খুশকি দূর করার শ্যাম্পু দিয়েই সাথে সাথে চুল ধুয়ে ফেলবেন না। এতে শ্যাম্পু মাথার ত্বকে পরিপূর্ণ ভাবে কাজ করতে পারেনা। কম করে হলেও ৫ মিনিট শ্যাম্পু থেকে ফেনা তুলে মাথায় রাখুন তারপর ধুয়ে ফেলুন।
২) মানসিক চিন্তাঃ
মানুষের খুশকি বাড়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে মানসিক চিন্তা বৃদ্ধি। হতাশা কিংবা মানসিক চিন্তা থেকে আপনার মাথার ত্বক ঝড়ে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মানসিক চিন্তা এবং হতাশা থেকে দূরে থাকুন।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান, বেশি বেশি সবজি খান। ফাস্ট ফুড পরিহার করুন। বিশেষ করে কোলা জাতীয় পানীয় পান কমিয়ে দিন।
৩) মাথায় দই প্রয়োগঃ
দই হচ্ছে প্রাকৃতিক এন্টি ড্রেন্ডাফ! হ্যাঁ অবাক হচ্ছেন? দই ব্যবহার মাথার খুলির খুশকি অনেকটাই কোমাতে পারে।
- মাথায় পানি দিয়ে চুল ভালো করে ভেজান। এবার মাথার তালুতে সরাসরি দই প্রয়োগ করুন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন।
- ১০-১৫ মিনিট পর ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধিয়ে ফেলুন। দেখবেন চুল হবে ঝলমলে সুন্দর প্রাণবন্ত এবং খুশকি হ্রাস পাবে।
৪) চুলে Aspirin প্রয়োগঃ
এস্পিরিন ট্যাবলেট ভেঙ্গে পানিতে গুলে তা মাথায় প্রয়োগ করলে আপনার চুলে খুশকি অনেকটাই হ্রাস পাবে।
- দুটি এস্পিরিন ট্যাবলেট ভেঙ্গে তা পানিতে গুলে নিন। এবার মাথার ত্বকে প্রয়োগ করে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন।
- এবার সারা মাথায় ভালো করে দুই মিনিট শ্যাম্পু রাখুন এবং শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৫) বেকিং সোডাঃ
বেকিং সোডা হচ্ছে সেম্পুর বিকল্প একটি এন্টিড্রেন্ডাফ। আপনি আপনার চুলে বেশি খুশকি হলে বেকিং সোডা প্রয়োগ করতে পারেন।
- সেম্পুর বদলে বেকিং সোডা নিয়ে তা চুল ভিজিয়ে চুলে প্রয়োগ করুন।
- মাথায় বেকিং সোডা দিয়ে কিছুক্ষণ হাত দিয়ে নাড়ুন, ভালভাবে ভেতরে প্রবেশ করতে দিন।
- এবার মাথা ধুয়ে ফেলুন। দুই সপ্তাহ পর ম্যাজিক দেখুন। আপনার মাথার ত্বকের খুশকি অনেকটাই দূর হবে এবং চুল হবে ঝলমলে।
৬) বেবি ওয়েলঃ
বেবি ওয়েল বা শিশুদের তেল ব্যবহার করতে পারেন মাথায়। চুল পড়া এবং খুশকি উভয়েই কোমাতে পারে বেবি ওয়েলে।
- রাতে খুব ভালো করে বেবি ওয়েল মাথায় দিয়ে ম্যাসেজ করুন। সারা রাত তেল মাথায় রাখুন।
- সকালে শ্যাম্পু করে মাথা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করলেই আপনার চুল হবে ঝলমলে সুন্দর খুশকি মুক্ত।
৭) অলিভ, নারকেল, তিল তেল এবং চায়ের লিকারঃ
- অলিভ ওয়েল, নারকেল তেল, চা পাতার লিকার পারে আপনার চুলের খুশকি দূর করতে। এসব রাতে মাথায় ম্যসেজ করে সকালে ত্বক ধুয়ে ফেলুন।
৮) মাউথ ওয়াশঃ
মাউথ ওয়াশ ও আপনার খুশকি দূর করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
- মাউথ ওয়াশ নিয়ে তা শ্যাম্পু করার আগে মাথার খুলিতে প্রয়োগ করুন।
- ২,৩ মিনিট পরে ভালো করে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন।
উপরে দেয়া সকল ধাপ একে একে অনুসরণ করুন। সব গুলো এক সাথে অনুসরণ করা লাগবেনা। মনে রাখবেন খুশকি কোন রোগ নয় এটি আপনার মাথার ত্বকের মৃত কোষ। তবে অনিয়মিত পরিচর্যা এবং অবহেলা মাথার ত্বকে খুশকির আধিক্য বাড়লে ছত্রাকের সৃষ্টি করে। ফলে ত্বকে ঘা সহ নানান রোগের তৈরি করে। সুস্থ থাকার উপায় জানুন এবং নিরাপদে সুন্দর লাইফস্টাইল গরুন।
আপনার স্বাস্থ্য বিষয়ক জানার যেকোনো জিজ্ঞাসা এবং পরামর্শ আমাদের জানান, আমরা আপনার মূল্যবান পরামর্শের অপেক্ষায় আছি। এ ধরণের আরও টিপস পেতে দি ঢাকা টাইমসের সাথেই থাকুন।
সূত্রঃ Stylecraze, Wikihow, Everydayroots,