দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মুখের দুর্গন্ধ ও মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া আমাদের একটি বড় সমস্যা। এসব সমস্যার কারণ জানা থাকলে তা প্রতিকার করাও সম্ভব। এ বিষয়েই আজকের আলোচনা।
আমরা দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন প্রকার রোগে ভুগে থাকি। দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া ও মুখের দুর্গন্ধযুক্ত ব্যক্তি হয়তো অনুভব করতে পারেন না তার কথা বলার সময় আমরা যারা তার কথা শোনেন তারা ততটায় বিরক্ত বোধ করে থাকি। বাধ্য হয়ে তার কথা শুনে থাকি। কিন্তু মুখ ফিরিয়ে রাখতে হয় অন্যদিকে। মুখে দুর্গন্ধযুক্ত ব্যক্তি ভুগতে পারেন হীনমন্যতায়।
মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো:
# মুখ গহ্বর ও দাঁত ভালোভাবে পরিষ্কার না রাখা।
# বিভিন্ন রকম রোগ ভোগের সময় মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে।
# বদ হজম, পেটের পীড়া বা অন্যান্য কারণে মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে।
# মুখ গহ্বরের রোগের মধ্যে দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া অন্যতম একটি রোগ। আমাদের দেশের আশি ভাগ মানুষই এই রোগে ভোগেন কিন্তু বিভিন্ন কারণে দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
# মাড়ি রোগের মধ্যে সাধারণ জিনজিভাইটিস ও পেরিওডনটাইটিস রোগই প্রধান যা ক্ষণস্থায়ী ও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে। এছাড়া বয়:সন্ধিক্ষণে ও গর্ভাবস্থায় দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
# আমাদের দেহ রক্ত কণিকা থেকে সৃষ্ট রোগ যেমন: এপ্লাস্টিক এমোনিয়া, হেমোফিলিয়া, মনোসাইটিক নিউমোনিয়া, পারপুরা, থ্যালাসেমিয়া, এগ্রোনুলোসাইটোসিস ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হলে মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। মাড়ি ও দাঁত অপরিষ্কার রাখার কারণে দাঁত ও মাড়ির সংযোগস্থলে এক ধরণের আবরণ জমা হয়। ক্রমে ক্রমে এই আবরণ থেকে এক ধরণের শক্ত পাথরের সৃষ্টি হয় যাকে আমরা জিনজাইভাল ক্যালকুলাস বলে থাকি। জমাকৃত এই শক্ত পাথরই স্বয়ং দাঁত ব্রাশ করার সময় পাথরের সঙ্গে মাড়ির ঘর্ষণের ফলে মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে।
চিকিৎসা
মুখে দুর্গন্ধ হওয়া ও মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ার সঠিক কারণ নির্ণয়ের পরেই এর চিকিৎসা আরম্ভ করা হয়। প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষাও করা হয়। সাধারণত: স্কিলিং ও জিনজিডেপটমি রোগ দুটির চিকিৎসা করা হয়। চিকিৎক প্রয়োজনে এন্টিবায়োটিক খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। প্রয়োজনে অন্যান্য চিকিৎসাও করাতে হতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হলো:
# খাওয়ার পরে নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা।
# বেশি বেশি করে তাজা ফল খাওয়া।
# মিষ্টি ও আঠালো খাবার না খাওয়া।
# প্রতি ছয়মাস পর পর ডেন্টাল সার্জারিকে দিয়ে দেখানো।
# প্রতিদিন ব্রাশ ফ্লসিং করা উচিত। তা নাহলে দাঁতের গায়ে ব্যাকটেরিয়াল প্লাক জমতে থাকে। ফলে দাঁতের ক্ষয়রোগ বা মাড়ির রোগ পরিলক্ষিত হয়।
# ফ্লোরাইড জাতীয় খাবার, সবজি, পানি ও ফ্লোরাইডযুক্ত প্লাস্ট ব্যবহার করা উচিত।
এরপর যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।