দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রোগ বলে কয়ে আসে না। আক্রান্ত ব্যক্তিটি হতে পারেন আপনার প্রিয়জনও। পক্ষাঘাতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কি করে সেবা দিবেন সে সম্পর্কে জানাতে আজকের এই আয়োজন।
আপনার প্রিয়জন বা কাছের মানুষদের যদি পক্ষাঘাতের সমস্যা থাকে তবে আপনি বুঝতে পারবেন বিষয়টি কত কষ্টদায়ক ও হৃদয় বিদারক। তবে বর্তমানে পক্ষাঘাতের আধুনিক চিকিৎসা ও পুনর্বাসন করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যদিও এ সমস্যা পুরোপুরি সারিয়ে তোলার মতো কোনো সমাধান নেই কিন্তু পুনর্বাসন মানুষকে তার জীবন স্বাভাবিক করতে যতটা সম্ভব চেষ্টা চালিয়ে যায় যাতে কারো তেমন সাহায্য ছাড়াই জীবন অতিবাহিত করা যায়। পক্ষাঘাত পুনর্বাসনের লক্ষ্যই থাকে রোগের জটিলতা কমিয়ে রোগীর জীবনে স্বস্তি প্রদান করা।
তবে পক্ষাঘাতে বেশীর ভাগ সময়ই পেশী দুর্বল হয়ে যায় এবং জড়তা এসে পড়ে। পুনর্বাসনের মাধ্যমে পেশীর দুর্বলতা এড়ানো যায়। অনেক ক্ষেত্রে পটাশিয়াম সহায়তা করে থাকে পক্ষাঘাতের আগ্রাসী আক্রমণের ক্ষেত্রে যা ওষুধের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়। এছাড়া যখন একটি ওষুধ কারো উপরে কাজ করে না তখন অন্য ধরনের ওষুধ ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়।
প্যারালাইসিস এটাক (paralysis attack) শরীরের যে কোনো স্থানেই হতে পারে। যেমন প্যারালাইসিসে কারো কারো মুখ বাঁকা হয়ে যায়। সার্জারিকে অনেক সময় সমাধান হিসাবে গ্রহণ করা। হপকিন্স গবেষণায় জানা গেছে, এ ধরণের সমস্যায় রোগীর জন্য আক্রান্ত জায়গায় গতিশীল পেশী স্থানান্তরের মাধ্যমে সমাধান দেয়া হয়।
চীনের গবেষকরা পক্ষাঘাতের রোগীদের চিকিৎসায় আকুপাংচারের ব্যবহারে বেশ পারদর্শী এবং এ সেক্টরে তাদের সাফল্যের কথা হরদম শোনা যায়। এতে তেমন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও নেই বলে শোনা যায়।
চলা-ফেরার ক্ষেত্রে হুইলচেয়ার হতে পারে একটি ভালো পরিবর্তক যা ইলেক্টিকভাবে বা সাধারণভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। রোগীদের সাহায্যের লক্ষ্যেই বাজারে রয়েছে মোটরভিত্তিক, হাতে চালানো, হাল্কা, ভাঁজ করা সম্ভব এমন সব আধুনিক হুইলচেয়ার। বর্তমানে বিভিন্ন উন্নত দেশে রোগীর মন বুঝে চলতে পারে এমন ধরণের আধুনিক হুইলচেয়ারও রয়েছে।
রোগীদের নিজের পায়ে দাঁড়ানো যায় এমন যন্ত্রও আবিস্কার করা হয়েছে। কেও চাইলে নকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গও ব্যবহার করতে পারে নিজেদের সুবিধার মতো যা একেবারে তাদের অরিজিনাল অঙ্গের মতোই দেখায় এবং কাজও করে। এক্ষেত্রে হয়তো নড়াচড়ায় খুব একটা স্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায় না প্রাথমিক ভাবে, কিন্তু বিজ্ঞানীরা থেমে নেই। তারা বানাচ্ছেন এমন সকল অঙ্গ যা নড়াচড়া করবে মানুষের অন্য সব স্বাভাবিক অঙ্গের মতোই। শুধু তাই নয় পাশাপাশি স্নায়ু এবং কোষের নির্দেশনা বুঝতেও সক্ষম হবে। মেরুদন্ডে আঘাতপ্রাপ্ত হলে তা সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তখন রোগী নিজেই নিজের জন্য বোঝায় পরিণত হন।
তাদের ব্যথা নাশের জন্য এখন ঔষধ রয়েছে। থেরাপি নিলে অনেক সময় মেরুদন্ডের কোষে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয় যা তাদের রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে থাকে, আর থেরাপির পাশাপাশি সার্জারীও আছে যা চমৎকার ফল দেখাতে সক্ষম। তবে সব রোগের জন্যই যেমন চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত, এখানেও ঠিক তাই। চিকিৎসকের পরামর্শ এবং নিয়ন্ত্রিত জীবন রোগীকে দীর্ঘমেয়াদি আরাম দিতে পারে।
তবে যে কোনো পক্ষাঘাতের রোগীর জন্য শুধু ওষুধেই কাজ হবে না। রোগ সেরে যাবে না, এমন ধারণা থেকে রোগীর কাছের মানুষগুলোকে বের হয়ে আসতে হবে। ওষুধ এবং ফিজিওথেরাপি পাশাপাশি চললে রোগী বেশ আরামে থাকবেন। তবে এসবই যথেষ্ট নয়,তার জন্য এসবের পাশাপাশি মানসিক শুশ্রূষাও অনেক জরুরি যাতে রোগী হীনমন্যতায় না ভোগেন।
তথ্যসূত্র : The Health Site