দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পাখিদের মধ্যে মাত্র কয়েক প্রজাতি মানুষের মত কথা বলা শিখতে পারে। তারমধ্যে টিয়া একটি। এ থেকে টিয়া পাখির বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। ইতোমধ্যে কিছু গবেষক টিয়া পাখির উপর গবেষণা করে আশ্চর্যজনক ফলাফল পান। টিয়া পাখি তাদের বাচ্চাদেরকে নাম দেয়। পরবর্তিতে এই নাম ধরেই তাদেরকে ডাকা হয়।
জন্মের এক সপ্তাহের মধ্যেই বাচ্চাদের নাম দেয় টিয়া। বাচ্চাগুলো এই নামে অভ্যস্ত হয়ে যায়। তারা নিজেদের নাম সহ বাসায় এবং আশে পাশে থাকা অন্যান্যদের নামও মনে রাখে। প্রত্যেকে নাম ধরেই কথাবার্তা চালায়। বাচ্চা অবস্থায় দেয়া নাম আজীবন থেকে যায়।
গবেষক কার্ল বার্গ এবং তার দল ভেনিজুয়েলায় বন্য টিয়া গবেষণা কেন্দ্রে টিয়া পাখির উপর গবেষণা শুরু করেন। তারা টিয়া পাখির ১৭টি বাসার ভিতরে ও বাইরে অডিও ও ভিডিও রেকর্ড করার জন্য যন্ত্রপাতি স্থাপন করে। এছাড়া এগুলোর বাইরে ১০৬টি কৃত্রিম বাসা বানিয়ে তাতেও যন্ত্রপাতি রাখা হয়। এভাবে তারা টিয়ার ভিন্ন ভিন্ন ৫০০০ ডাক রেকর্ড করে। এগুলোর মিল অমিল নিয়ে তারা গবেষণা করেন।
এ থেকে প্রাপ্ত ফলাফল খুবই আশ্চর্যজনক। টিয়াগুলো বাচ্চাদের নাম দেয়ার পাশাপাশি নিজেদের সমাজে কথাবার্তার সময় নাম ধরে সম্বোধন করে থাকে।
এরপর গবেষকেরা জানতে আগ্রহী হয়, এই নামকরণ কি বংশগত? এটি জানার জন্য তারা নয়টি বাসায় থাকা টিয়ার ডিম উল্টাপাল্টা করা বণ্টন করে দেয়। অতঃপর দেখা যায় পালক পিতামাতা আসল পিতামাতার মতই বাচ্চাগুলোকে বড় করে তুলছে। এমনকি নামও একই ভাবেই দিচ্ছে। এতে বুঝা যায়, নাম দেয়ার ব্যাপারটি বংশগত নয়, সামাজিক বৈশিষ্ট্য।
কার্ল বার্গের মতে, যদিও মানুষ ভাববে টিয়াগুলো অর্থহীন কিচির মিচির করছে, আদতে তা ঠিক নয়। তারা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা চালাচ্ছে। একটি শব্দ বারবার করলে বুঝতে হবে তারা নাম ধরে ডাকছে। ব্যাপারটি অনেকটা এমন, একটি টিয়া আরেকটি টিয়াকে বলবে, “হ্যালো টম, কিছু খেতে চাও? আমি বব”
টিয়া পাখির মস্তিষ্ক অন্যান্য পাখির তুলনায় কিছুটা বড় হওয়ায় এদের বুদ্ধিমত্তা বেশি। তাইতো টিয়া নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ বেশি। আর বুদ্ধিমত্তা আর সৌন্দর্যের জন্য টিয়া আমাদের সকলের কাছেই খুবই পছন্দের পাখি। কেও বাসায় টিয়া পাখি পালন করলে তার নেম দেয়ার সময় মনে রাখবেন, ইতোমধ্যেই তার বাবামায়ের দেয়া একটি নাম আছে।
গবেষণাকালীন একটি ভিডিও দেখুনঃ
সূত্রঃ dailymail