দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রতিবন্ধিদের অবজ্ঞা-অবহেলা করাটা যেনো আমাদের সমাজের রীতিতে পরিণত হয়েছে। আমরা প্রায়ই এই প্রতিবন্ধিদের অবহেলার দৃশ্য দেখতে পায়। অনেক সময় দেখা যায়, বস্ত্রহীন শরীর। রশি দিয়ে বাঁধা পা। দিন কাটে রাস্তা-ঘাটে। আর রাতে কুঁড়েঘর। কাওকে দেখলে হাসিমুখে তাকিয়ে থাকে। সেই হাসিতে ফুঠে ওঠে সীমাহীন কষ্টের চাপ।
এমনই একজন প্রতিবন্ধি মিঠন। অন্যের বাড়িতে কাজের বিনিময়ে পাওয়া খাবারে কোনমতে চারজনের পরিবার চালান অসহায় মা। এটি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার জন্ম থেকে মানসিক প্রতিবন্ধী ১০ বছর বয়সী মিঠনের দুর্বিষহ জীবনের চিত্র। প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করলেও মিঠনদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। ওদের খবর কেও রাখে না। প্রতিবন্ধী ভাতা দূরে থাক খাবারও জুটে না ওদের। মিঠন দশঘর ইউনিয়নের বাইশঘর গ্রামের দিনমজুর আমিরউদ্দিনের ছেলে। আমিরউদ্দিন তাদের ছেড়ে চলে যাওয়ার পর মিঠনের মা জুলেখা বিবি তিন শিশুসন্তান নিয়ে একই গ্রামের জিলু মিয়ার বাড়িতে একচালা কুঁড়েঘরে আশ্রয় নেন। বড় ছেলে প্রতিবন্ধী মিঠনকে নিয়ে পড়েন বিপাকে। নিজ হাতে কিছুই করতে পারে না সে। প্রতিবন্ধী ভাতার জন্যে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা সমাজসেবা অফিস ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন সুফল পায়নি মিঠনের পরিবার। মিঠনের মা জুলেখা বিবি জানান- কেও আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে না। বেঁচে থাকা এখন দুষ্কর হয়ে পড়েছে। পুকুরে ডোবার ও গাড়ি চাপা পড়ার ভয়ে রোজ মিঠনকে বেঁধে রেখে কাজে যেতে হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ছাতির মিয়া বলেন, সে যেন প্রতিবন্ধী ভাতা পায় সে ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুল মোন্তাকিম বলেন, বরাদ্দ এলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সবার বক্তব্যই দায়িত্ব এড়াবার মতো। কেওই এসব শিশুদের দায়িত্ব নিতে চান না। অথচ এরা আমাদের সমাজে দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাড় করতে পথে-প্রান্তরে ঘুরে বেড়ায় অসহায়ের মতো। আমরা সমাজের বিত্তবানরা যদি একটু সুদৃষ্টি দিতাম, তাহলে ওদের হয়তো এভাবে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হতো না।