দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রায় ৬০০০ মানুষের উপর গবেষণা করে দেখা গিয়েছে ই-সিগারেট ধূমপান ত্যাগ করতে ধূমপায়ীদের সাহায্য করে থাকে। যারা এটি ব্যবহার করে না তাদের চেয়ে ধূমপান ত্যাগের ক্ষেত্রে এটি ৬০ শতাংশ বেশি সহযোগিতা করে থাকে। ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের একদল গবেষক সাম্প্রতিক গবেষণায় এই ধারণা প্রকাশ করেছেন।
ই-সিগারেটের এই বিষয়টি বেশ কয়েক বছর যাবত সমালোচিত হয়ে আসছিলো। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে এই ই-সিগারেটের ফলে পূর্বের চেয়ে আরো ২ মিলিয়ন বেশি লোক এই ধূমপানের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ২০১০ সালের পর থেকে ই-সিগারেটের ফলে আরো ধূমপানে আসক্ত হয়েছে ৮ শতাংশ লোক। ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে একটি জরিপে করে দেখা যায় যে, বেশিরভাগ ব্যবহারকারী মনে করে এই ই-সিগারেটের ফলে তারা ধূমপানের স্বাদ পাচ্ছেন এবং তার সাথে সাথে তাদের শরীরে নিকোটিন কম প্রবেশ করছে। কিন্তু এই বিতর্কিত সিগারেটটি জনসম্মুখে খাওয়া নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাজ্যের ওয়েলস প্রদেশের প্রাদেশিক সরকার। কেননা তারা মনে করেন এরফলে অধূমপায়ীদের ধূমপানে আরো বেশি আসক্ত করতে পারে।
সে যাই হোক, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের প্রধান গবেষক রবার্ট ওয়েস্ট মনে করেন, এই ই-সিগারেটটিকে বিতর্কিত পণ্য না মনে করে সাধুবাদ জানানোই উচিত কেননা এটি ধূমপায়ীদের ধুমপান ত্যাগ করতে সাহায্য করছে। তবে তার পাশাপাশি এর ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের বৃদ্ধি জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। কিছু কিছু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মনে করছেন এই ই-সিগারেটের ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের ফলে ষাটের দশকের মতো সিগারেট খাওয়ার প্রবণতা আবার বেড়ে যাবে। ফলে মানুষ সিগারেট খাওয়াকে একটি স্বাভাবিক কাজ ধরে নিবে। উল্লেখ্য যে, ষাটের দশকে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে ধূমপায়ীদের পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। তখন এটি একটি ট্রেন্ড হিসেবে উন্নত বিশ্বে পরিচিত ছিল। সে দশকের শেষের দিকে ধূমপান বিরোধী আন্দোলন জোরালো হলে উন্নত বিশ্বের দেশে প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হয়।
ই-সিগারেটকে এখনো যুক্তরাজ্যের এনএইচএস বা ন্যাশনাল হেলথ সায়েন্স একটি স্বীকৃত ওষুধ হিসেবে গণ্য করেনি। কিন্তু ড্রাগ রেগুলাটরি অব মেডিসিন অব হেলথকেয়ার প্রডাক্ট এই ই-সিগারেটকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একটি স্বীকৃত ওষুধ হিসেবে লাইসেন্স প্রদান করেছে। কিন্তু যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের গবেষক বলেন, এতো দ্রুত একে একটি ওষুধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ঠিক হয়নি। একে নিয়ে আরো গবেষণা করার দরকার ছিল বলে মনে করেন তিনি।
তথ্যসূত্রঃ বিবিসি