দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিয়ে হলো সামাজিক বন্ধনের একটি স্বীকৃত মাধ্যম। এই বন্ধনের মাধ্যমে আমরা মানবজাতির অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার যাত্রা শুরু করি। কিন্তু এই বন্ধনটির মাঝেও ফাটল ধরে। সৃষ্টি হয় পারিবারিক অশান্তি। অবশেষে পরিণতি হয় বন্ধন ভেঙ্গে দেওয়া বা ডিভোর্স। তাই প্রতিটি সচেতন নর-নারীর ক্ষেত্রে বিয়ের আগে একটিবার চিন্তা করা উচিত যে কাকে বিয়ে করা উচিত বা উচিত নয়।
আপাতদৃষ্টিতে দেখলে মনে হয় যে, সম্পর্কগুলো ভালো হবে। সে সম্পর্কগুলোই পরবর্তীতে তিক্ততায় গিয়ে পৌঁছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক বিয়ের আগে যে সম্পর্কগুলো ভাবা উচিত।
১. সহপাঠী
বিয়ের আগে যে সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি সুন্দর দাম্পত্যের আভাস দেয় তা হলো সহপাঠী। কিন্তু দুঃখের বিষয়টি হলো বিয়ের পরে সবচেয়ে তিক্ততার অভিজ্ঞতাও তাদের। এর কারণ হতে পারে দুইটি। প্রথমত সমবয়স, অর্থাৎ মেয়েদের সাংসারিক মানসিকতা আসে ছেলেদের অনেক আগেই। ফলে সহপাঠী সংসারে একজন মেয়ে যখন সাংসারিক বিষয়াবলী নিয়ে চিন্তা করে তখন ছেলেটির চিন্তাভাবনা হয়তো সংসারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। দ্বিতীয়ত সহপাঠীদের মধ্যে বন্ধনের ফলে বিয়ের আগেই তারা একে অপরকে বেশি জেনে ফেলে যা পরবর্তী সময়ে তাদের একে অপরকে জানার আকর্ষণের বিরুদ্ধে কাজ করে।
২. প্রিয় বন্ধু বা বান্ধবীর ভাই বা বোন
আপনার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু বা বান্ধবীর প্রিয় হওয়ার কারণ আপনার সাথে তার যথেষ্ট মিল রয়েছে। কিন্তু এই সুন্দর বৈশিষ্ট্যগুলো যে তার ভাই কিংবা বোনের মধ্যে পাবেন এই ধারণা করা কিন্তু ভুল। কারণ প্রতিটি মানুষই আলাদা বৈশিষ্ট্যের হয়ে থাকে। এছাড়া বন্ধুদের সাথে গোপন অনেক কথাই হয়ে থাকে। যার প্রভাব বিয়ের উপর পড়ে।
৩. রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়স্বজন
আমাদের সমাজে এই সম্পর্কের অনেক বিয়েশাদী হয়ে থাকে। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞান বলে এটি করা উচিত নয় কেননা রক্তের সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের জীনগত অনেক সামঞ্জস্যতা থাকতে পারে। যার ক্ষতিকর একটি প্রভাব পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেত্রে পড়তে পারে। এছাড়াও রক্তের আরএইচ ফ্যাক্টর নামে একটি বিষয় রয়েছে এই আরএইচ ফ্যাক্টর দুটি মানুষের মধ্যে একই হলে পরবর্তী প্রজন্মের অনেক ক্ষতিকর রোগ হয়ে থাকে।
৪. নিজ ধর্মের বাইরে বিয়ে করা
এই ধরনের বিয়ে আমাদের সমাজে খুবই নগণ্য। কিন্তু এই সকল সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি ভুগতে হয়। কেননা স্বামী-স্ত্রীকে সারাজীবন কাটাতে হয় আত্মীয়-স্বজনের সান্নিধ্য ছাড়া।
৫. প্রাক্তন প্রেমিক-প্রেমিকা
বিয়ের আগে প্রেম ভালবাসা হতেই পারে এটাই স্বাভাবিক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় প্রেমের সমাপ্তি ঘটে বিরহে। তারপর আপনার নতুন করে ভালবাসা হলো কিন্তু আপনার পুরনো প্রেমিক বা প্রেমিকা ফিরে আসলে তার কাছে কি আবার ফিরে যাবেন? এটি কখনই করতে যাবেন না। এরফলে পরবর্তীতে একটি তিক্তকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। মনে রাখবেন যে আপনাকে একবার ছেড়ে চলে গিয়েছে সে কিন্তু আবার চলে যেতে পারে।
৬. বেশি ধনী কিংবা গরিব কাউকে
অর্থনৈতিক সামঞ্জস্যতা পারিবারিক বন্ধনের ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর একটি পন্থা। মাত্রা অতিরিক্ত অর্থনৈতিক ভারসাম্যহীনতা দুটি পরিবারের জন্যই মনঃকষ্টের কারণ হতে পারে। সত্যিকারঅর্থে এই ধরনের সম্পর্ক নাটক সিনেমাতেই সম্ভব।
৭. মিডিয়াব্যক্তিত্ব
সবার মধ্যেই নাটক সিনেমার নায়ক নায়িকাদের বিয়ে করার একটি সুপ্ত ইচ্ছে থাকে। কিন্তু এই ধরনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনার স্বামী কিংবা স্ত্রী যিনি মিডিয়ার সাথে জড়িত তাকে তার পেশাগত কারণে বাইরে বেশিরভাগ সময় কাটাতে হচ্ছে। এটি মেনে নেওয়ার মানসিকতা না থাকলে এই ধরনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে না যাওয়াই ভালো।