দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হতে যাচ্ছে। অসম্ভব উত্তেজনার একটি মাস কাটবে বিশ্ববাসীর। ৩২টি দেশের অংশগ্রহণে এবারের আসর হবে ব্রাজিলে। এইবারের বলের নাম ব্রাজুকা। এটি তৈরি করেছে গুলশান বিবি সহ পাকিস্থানের একদল মহিলা। অধীর আগ্রহে তারা অপেক্ষা করছে তাদের তৈরি বল দিয়ে বিশ্বের নামি দামি খেলোয়াড়েরা কখন খেলবে।
মূলত বিশ্বখ্যাত ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস এবারও বিশ্বকাপের বল তৈরির দায়িত্ব পেয়েছে। গত বিশ্বকাপে জাবুলানি বল নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছিল। তাই অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তারা তৈরি করেছে ব্রাজুকা। এই বল সবদিক থেকে আদর্শ বলে মনে করছে জার্মান প্রতিষ্ঠানটি। অ্যাডিডাসের প্রধান প্রস্তুতকারক চীনের চাহিদা মেটাতে না পারায় তড়িঘড়ি করে তারা দায়িত্ব দেয় পাকিস্থানের ‘ফরোয়ার্ড স্পোর্টস’কে।
পাকিস্থানের পূর্বাঞ্চলের শহর শিয়ালকোটের ফরোয়ার্ড স্পোর্টস। অ্যাডিডাসের সঙ্গে তাদের এটা প্রথম কাজ নয়। ১৯৯৫ সাল থেকে তাদের সাথে কাজ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। অ্যাডিডাসের সঙ্গে চুক্তিতে তারা তৈরি করেছে চ্যাম্পিয়নস লিগ ও বুন্দেসলিগার বল। আর এবার বিশ্বকাপ।
বিশ্বকাপের এই বিশাল দায়িত্ব পেয়ে ফরোয়ার্ড তার কর্মীদের কাজে লাগিয়ে দিয়েছে। মাত্র এক মাসের মধ্যে বল তৈরির সকল উপাদান গুছিয়ে নেয় এটি। মজার ব্যাপার হচ্ছে বল তৈরির শ্রমিকদের মধ্যে ৯০ শতাংশ ছিল মহিলা। এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ‘ফরোয়ার্ড স্পোটর্স’ ফ্যাক্টরির প্রধান নির্বাহী খাজা মাসুদ আকতার বলেন, ‘মহিলারা পুরুষদের চেয়ে বেশি পরিশ্রমী এবং নির্ভুলভাবে কাজ করতে পারে।’
দিন-রাত পরিশ্রম করে ফরোয়ার্ড’র কর্মী গুলশান বিবি তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে তৈরি করেছেন অগুনতি ‘ব্রাজুকা’। নিজের তৈরি বলে বিশ্বসেরা খেলোয়াড়দের পায়ের জাদু দেখতে রীতিমতো মুখিয়ে আছেন গুলশান। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ দেখার জন্য মুখিয়ে আছি। ইনশাআল্লাহ আমরা খেলাগুলো দেখব। আমরা মহিলারা যারা বলগুলো তৈরি করেছি, তারা সবাই ভীষণ গর্বিত।’
পাকিস্তানের অনেক এলাকা আছে, যেখানে মেয়েরা অবহেলা-অবজ্ঞার শিকার। সেই দেশের মহিলাদের হাতে তৈরি বল দিয়ে বিশ্বকাপের আসর হতে যাচ্ছে। মহিলাদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় এটি একটি দৃষ্টান্ত।