দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বছরের পর বছর বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষিত থাকলেও হঠাৎ করে কি হলো যে ‘দাও-কুড়াল’ সম্পর্ক হলো বিজিবির সঙ্গে বিজিপির? তবে এর নেপথ্যে রয়েছে ইয়াবা ও রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশে বাধা দেওয়া।
হঠাৎ করেই বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত গরম হয়ে উঠেছে। কারণ ছাড়া বিজিবির এক সদস্যের ওপর হামলা করে হত্যা করেছে মিয়ানমার বর্ডার পুলিশ বিজিপি। এমন আচরণ ওরা কেনো করলো তা প্রথমে বুঝে উঠতে পারেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি। তবে অনেকেই এটির সঙ্গে ইয়াবা ট্যাবলেট ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে বাধা দেওয়ার বিষয়টিকে নেপথ্যের কারণ হিসেবেই দেখছেন। আর এসব কারণেই মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি নাখোশ হয়েছে বিজিবির ওপর। বিজিবির বাধা দানের কারণে পাচারের বিপুল অর্থ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মিয়ানমার বাহিনীর অসাধু কিছু কর্মকর্তারা। এ কারণেই বিজিবির মনোবল ভাঙতে হামলা করা হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিজিবি সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য দিয়েছে সংবাদ মাধ্যম।
তাদের মতে, মিয়ানমারে তৈরি হওয়া কোটি কোটি ইয়াবা ট্যাবলেট প্রতিদিন বিজিপির সহযোগিতায় মাদক ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করছিল। মাস দুই আগে ইয়াবার বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করে সরকার। যে কারণে টেকনাফ এলাকায় কিছুদিন আগে ৬ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’। এরপর থেকে ইয়াবা আনার রুট পরিবর্তন করে ব্যবসায়ীরা। এক পর্যায়ে তারা বরিশাল-চাঁদপুর পর্যন্ত বিস্তৃত করে ফেলে। সেখানেও বাধা দিচ্ছে বিজিবি। বিজিবি বিভিন্ন বাহিনীকে তথ্য দিয়ে বিভিন্ন সময় সহযোগিতাও করে আসছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিজিবির মনোবল ভাংতেই হামলার প্রস্তুতি নেয় বিজিপি।
অভিযোগ রয়েছে, বিজিপির সহযোগিতায় মিয়ানমারের মংডু প্রদেশে ইয়াবার কারখানা পর্যন্ত গড়ে উঠেছে। এইসব ইয়াবা পাচারে সহযোগিতা করার বিনিময়ে বিজিপির অনেক সদস্যই বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন।
বিজিবি বলেছে, দুর্গম এলাকার কারণে ইতিপূর্বে নাইক্ষ্যংছড়ির পানছড়ির সীমান্তে বিজিবির টহল দেওয়া সম্ভব হতো না। অনেকটা অরক্ষিত ছিল ওই এলাকা। ফলে ওই স্থান দিয়ে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ এবং ইয়াবা পাঠানোর রুট তৈরি করেছিল মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সাম্প্রতিক সময়ে ওইসব অঞ্চলে বিজিবি গড়ে তোলে ৬টি বর্ডার আউট পোস্ট (বিওপি) যাকে বলা হয় সীমান্ত চৌকি। ওই সীমান্ত চৌকিগুলো কিছুদিন আগে চালু করা হয়েছে। এ অবস্থায় ইয়াবা এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে আরও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সে কারণে বিজিপি’র ওইসব অসাধু কর্মকর্তারা বিজিবির ওপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত। যার মাশুল গুণতে হলো বিজিবি সদস্য মিজানুর রহমানকে। তবে বিজিপি যতই ছলচাতুরি করুক না কেনো কোনো প্রকারেই বিজিবির মনোবল ভাংতে পারবে না বলে মনে করছে বিজিবির কর্মকর্তারা।
গত কযেকদিন ধরেই সীমান্তে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এখন বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পুরোপুরি সুরক্ষিত।