দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রতিটি মুসলমানদের জন্য রমজান মাস অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ মাসে মহান রাব্বুল আলামিন বিশেষ বরকত দিয়ে থাকেন। তবে প্রতিটি মুসলমানদেরও কিছু কর্তব্য রয়েছে। আজ রমজানে মুসলমানদের কর্তব্য সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস রমজান। বহু ফজিলত রয়েছে এ পবিত্র মাসটিতে। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা করে থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তারা মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য লাভের জন্য সচেষ্ট থাকেন। আত্মশুদ্ধির এক সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে এ মাসে। এক মাস রোজা রাখা এবং সকল রকম পাপাচার থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা এ মাসের এক মহান কর্তব্য। এই কর্তব্যগুলো প্রতিটি মুসলমানকে পালন করতে হবে। কারণ দেখতে দেখতে চলে যাবে রমজান মাস। কিন্তু আমরা হয়তো হারিয়ে ফেলবো সেই সুযোগ। সকল কলুষতা থেকে মুক্তি পাওয়ার এই মোক্ষম সুযোগকে প্রতি মুসলমানদের কাজে লাগাতে হবে।
এই পবিত্র রমজান মাসে যে কাজগুলো করবেন:
প্রথমত রোজা রাখতে হবে
রোজা সম্পর্কে কোরআনের আয়াতে বলা হয়েছে- ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হলো যেভাবে তা ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা সংযমী হও। সূরা বাকারা, আয়াত-১৮৩।’
অপর এক আয়াতে মহান আল্লাহতায়ালা আরও বলেন- ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সেই মাসকে পায় সে যেনো রোজা রাখে। সূরা বাকারা, আয়াত-১৮৫।’ অতএব মুসলমান হিসেবে এই মাসটিতে অবশ্যই রোজা রাখুন।
দ্বিতীয়ত নামাজ আদায় করুন
শুধু রোজা রাখলেই হবে না, সেই সঙ্গে নামাজ আদায় করতে হবে এই পবিত্র মাসটিতে। কারণ রোজা যেমন প্রতিটি মুসলমানের ওপর ফরজ ঠিক তেমনি নামাজও ফরজ। রমজানে ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ আদায়ের পাশাপাশি আরও একটি বড় সুন্নত নামাজ রয়েছে তারাবীহের নামাজ। এটি একটি ফজিলতের নামাজ। সারাদিন রোজা রেখে ওই ক্লান্ত শরীরে মসজিদে গিয়ে ২০ রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করা বহু ছওয়াবের। প্রতিটি মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এই তারাবীহের নামাজ। এটির মাধ্যমে একজন মুসলমান আত্মশুদ্ধি লাভ করতে পারবেন। বহু ছওয়াব হাসিল করা যাবে এই তারাবীহের নামাজ আদায়ের মাধ্যমে। কারণ পবিত্র কোরআন খতম হয় এই নামাজের মাধ্যমে। আমরা যারা কোনআন পড়া জানিনা তারা ঈমামের পেছনে দাঁড়িয়ে কোরআন তেলাওয়াত শুনতে পারছি। সেই সঙ্গে কোরআন খতমের ছওয়াবও হাসিল করছি। এভাবে এ মাসে প্রতিটি নামাজেই রয়েছে অশেষ ছওয়াব। তাছাড়া হাদিস শরীফে আছে, এ মাসে এক রাকাত নামাজ পড়লে ৭০ গুণ বেশি ছওয়াব পাওয়া যায়।
রমজানের আরেক ফজিলত সত্য কথা বলা:
আমরা সবাই অনেক সময় প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে মিথ্যা কথা বলে থাকি। সেই সব অসত্য বা মিথ্যা পরিহারের মাধ্যম হতে পারে এই পবিত্র রমজান মাস। এ মাসে মিথ্যা বলা যাবে না বা রোজা রেখে মিথ্যা বলতে গেলে আপনার বিবেক বাধাগ্রস্থ্ হবে। আর এটি আপনার জন্য হবে একটি ভালো দিক। কারণ বাকি ১১ মাস আপনার মিথ্যা না বলার অভ্যাস হবে। এটিই বা আপনার জন্য কম কি?
বিবাদ-অন্যায়-কটুকথা থেকে বিরত থাকা:
এ রমজান মাসে আরেকটি বিষয় অত্যন্ত সুন্দর আর তা হলো বিবাদ থেকে দুরে থাকা। অন্যায় থেকে নিজেকে মুক্ত রাখাও এ মাসের আরেকটি বড় পাওয়া। চলতে ফিরতে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে আমরা বিবাদে জড়িয়ে পড়ি। এ মাসের বরকতে আমরা সে বিবাদ থেকে দূরে থাকতে পারি অনায়াসে। আমরা যে কোনো সময় জেনে বা না বুঝে অন্যায় করে ফেলি। এ মাসের বরকতে সে সব অন্যায় থেকে দূরে থাকতে পারি। আবার আমরা অযথায় মানুষকে কটু কথা বলে থাকি। এ মাসে কটুকথা বলা থেকে বিরত থেকে ভালো অভ্যাসে পরিণত করতে পারি।
এমনিভাবে আমরা এই পবিত্র মাসে সকল কু-অভ্যাস পরিত্যাগ করে ভালো অভ্যাসে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারি। পবিত্র রমজান মাস সে শিক্ষায় প্রদান করে থাকে। রমজানের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে জীবনের বাকি সময় পার করার প্রত্যাশা রইলো আমাদের সকলের। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সকলকে সেই তৌফিক দান করুন- আমিন।