দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রোজায় সারাদিন না খাওয়া হলেও দিনের শেষে খাওয়া হয় পরিমাণের চাইতে বেশি খাবার। আর রোজায় ইফতারীতে খাবারের তালিকায় থাকে অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার। এই তেলযুক্ত খাবারগুলো খেয়ে আর ব্যায়াম না করার কারণে অনেকেরই ওজন কমার বদলে উল্টো বেড়ে যায়। আবার রোজায় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলেও কোনো ভারী ব্যায়াম এই সময়ে করা উচিত হবে না। তাই রোজায় ব্যায়াম করতে চাইলে করুন বিশেষ কিছু হালকা ব্যায়াম।
সকাল কিংবা বিকালের হাঁটা
প্রাতঃভ্রমণের অভ্যাস রয়েছে অনেকেরই কিন্তু রোজায় সেহরির পর ঘুমানোর ফলে তাই সকালে হয়ে উঠে না প্রাতঃভ্রমণ। তাই রোজায় প্রাতঃভ্রমণের বদলে করা যেতে পারে বিকালের হাঁটা। রোজা হলো সংযমের মাস কিন্তু মজার বিষয় হলো এই রোজাতেই আমাদের অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে থাকে। আর বিশেষ করে তৈলাক্ত খাবার। যা আপনার শরীরে চর্বির পরিমাণ বাড়িয়ে দিবে। তাই রোজার মাসে হালকা ব্যায়াম হিসেবে দৌড়ানোর বদলে হাটুন। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য বছরের অন্য সময় সকাল কিংবা বিকালে দৌড়াতে যান তাঁরা এই সময়টাতে হাটার দৌড়ানোর বদলে হাঁটুন। রোজা রেখে দৌড়ালে আপনার স্বাস্থ্যর উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
বাসায় হালকা যোগ ব্যায়াম
যোগব্যায়াম সবসময়ের জন্যই হালকা ব্যায়াম কিন্তু বেশ কার্যকর ব্যায়াম। রোজা রেখে আপনি অনায়েসেই যোগ ব্যায়াম করতে পারবেন। রোজার এই সময়টার জন্য যোগ ব্যায়ামের একটু সহজ আসনগুলো বেছে নিতে পারেন। তারপর বাসায় নিয়মিত এই সকল যোগব্যায়াম করার চেষ্টা করুন, দেখবেন শরীর কেমন ঝরঝরে লাগছে। তাছাড়া যোগ ব্যায়ামের জন্য বেশি স্থানের প্রয়োজনও হয় না। আপনি আপনার শোবার ঘরেই সকালের ঘুম থেকে উঠে করতে পারেন যোগব্যায়াম। এটি যেমন আপনার শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমতে দিবে না তেমনি আবার আপনাকে ক্লান্তও করবে না।
সংগীতের ছন্দে অ্যারোবিক্স
মিউজিক ছেড়ে তার তালে তালে হাত পা নাড়ানোর ব্যায়ামকে বলে অ্যারোবিক্স। পশ্চিমা দেশে এই ব্যায়ামের বেশ কদর রয়েছে। হালকা কিন্তু বেশ কার্যকর বলে নানাবয়সী মানুষ এই ব্যায়াম করে থাকেন। রোজার সময় এই ব্যায়ামটা করতে পারেন। তবে খুব বেশি পরিশ্রম না করে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মিনিট করে অ্যারোবিক্স করতে পারেন। অ্যারোবিক্সের জন্য কিছু নির্দিষ্ট সংগীত রয়েছে আবার বিভিন্ন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সাথে সাথেও এটি করা যায়। বিভিন্ন ব্যায়াম সামগ্রী বিক্রি করে এমন দোকানগুলোতে পাওয়া যায় অ্যারোবিক্সের উপকরণ। আপনি বাসায় কোন ধরনের উপকরণ ছাড়াও করতে পারেন অ্যারোবিক্স।
ঘরের বা বাগানের কাজ করা
প্রতিদিন ঘর পরিষ্কার করা কিংবা বাগানের কাজ করার মাধ্যমেও শরীর থেকে ক্ষয় হয় প্রচুর ক্যালরি। আর তাই ঘরের কাজ সামলানো কিংবা বাগানের কাজ করা হতে পারে এই সময়ের ব্যায়ামের বিকল্প। বাসা বাড়ির নারীরা নিয়মিতই তাদের ঘরের কাজ করে থাকেন। এই কাজের ফলে যেমন পরিছন্নতা হচ্ছে তেমনি হচ্ছে ব্যায়াম। এছাড়া নারী বা পুরুষরা করতে পারেন বাগানের দেখাশোনা এটি একই সাথে যেমন আনন্দের তেমনি স্বাস্থ্যকর। এছাড়া আজকাল অনেকেই বাসার ব্যলকনিতে ছোট্ট বাগান করছেন। আপনার ছোট্ট ব্যলকনিতে থাকা বাগানের পরিচর্যা করতে পারেন। তাতে করে যেমন সময় অতিবাহিত হবে তেমনি আপনার শরীরের ব্যায়ামও হবে।
কিছুক্ষেত্রে মেনে চলুন সতর্কতা
ঘরের এই ব্যায়ামগুলো একেবারেই হালকা তবুও কিছুক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিবেন। আপনার যদি কোনো ধরনের শারীরিক অসুস্থতা থাকে তাহলে রোজা রেখে ব্যায়াম না করাই ভালো। ইফতারের পরে প্রচুর পরিমাণে পানি খাবেন। কারণ ব্যায়াম করলে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। বমি ভাব, মাথা ঘুরানো, অতিরিক্ত দূর্বলতা, চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি সমস্যাগুলো দেখা দিলে ব্যায়াম করবেন না। রোজার মাস শেষ হলে আবার আগের ব্যায়ামের রুটিনে ফিরে যান। আবার যাদের হৃদজনিত জটিলতা রয়েছে তারা ঘরের ব্যায়াম কিংবা বাইরের ব্যায়ামের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবেন।