দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এ কালের এক রাজনৈতিক নায়ক এরশাদ। অনেকদিন পর আবার আলোচনায় চলে এসেছেন সাবেক এই রাষ্ট্রপ্রধান। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) লঙ্ঘন করায় এবার কি তিনি সাজার মুখোমুখি হচ্ছেন? এমন প্রশ্নই এবার সামনে এসেছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলের এক মহা নায়ক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনি বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীনদের রসানলে পড়েছেন। বিশেষ করে আওয়ামীলীগ সরকারের গত সময় তিনি মহাজোটে ছিলেন। এবার নির্বাচনের আগে এরশাদকে নিয়ে কত নাটকই না হয়ে গেলো। অবশ্য এরজন্য পুরো দোষ কিন্তু এরশাদকে দেওয়া যাবে না। তিনি এবারের নির্বাচনের সময় সাংবাদিকদের অপকটে বলেছিলেন, ‘আমি রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছি। আমাকে মামলায় ঝুলিয়ে জিম্মি করে যা খুশি তাই করানো হচ্ছে।’
এবারের নির্বাচন হওয়ার পরও মঞ্জুর হত্যা মামলার রায় স্থগিত ও বিচারক পরিবর্তন নানা বিষয় নিয়ে রয়েছে নানা সমালোচনা। এরশাদকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত করা হয়েছে। তারপরও এরশাদ কিন্তু মাঝে-মধ্যেই সরকারের বিরুদ্ধে বলে যাচ্ছেন। সুযোগ পেলেই নানা সমালোচনা করছেন সরকারের।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে শেষ পর্যন্ত আরেক বিপদে পড়তে যাচ্ছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। সময়মতো নির্বাচনী হিসাব জমা না দেয়ার কারণে নাকি তাকে কঠিন শাস্তি পেতে হতে পারে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, হিসাব না দেয়ার অপরাধে ২ থেকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিতও হতে পারেন তিনি। আর আদালত যদি তাঁকে কারাদন্ড দিলে সংসদ সদস্য পদও তিনি হারাতে পারেন এমন আভাষ দেওয়া হয়েছে সংবাদ মাধ্যমের খবরে।
ওই খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি মামলার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকেও রিটার্নিং অফিসারকে নাকি সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এবং জেলা রিটার্নিং অফিসার মো: হাবিবুর রহমান সে অনুযায়ী নাকি মামলাও করেছেন। এখন শুধুই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বলে ওই খবরে উল্রেখ করা হয়।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এরশাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা নিয়ে রয়েছে নানা নাটকীয়তা। সে সময় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেও যথাযথভাবে হয়নি বলে রংপুর-৩ (সদর) এবং লালমনিরহাট-১ আসনের রিটার্নিং অফিসার তা গ্রহণ করেনি। যে কারণে বহাল থাকে এই দুই আসনে এরশাদের প্রার্থিতা। নির্বাচনের পর রংপুর-৩ আসনের হিসাব জমা দেন। কিন্তু লালমনিরহাট-১ আসনের হিসাব আর জমা দেননি এরশাদ। সেই কারণে আইনের ফাঁদে ফেঁসে গেছেন এরশাদ। বিষয়টিকে এতদিন গুরুত্ব না দিলেও এখন তা বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে। আবার আরপিও অনুযায়ী মামলা হওয়ার কারণে মামলা প্রত্যাহারেরও কোনো সুযোগ নেই- এমন কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
>>>>>
উল্লেখ্য, ৮ জানুয়ারি নির্বাচিতদের গেজেট প্রকাশ করার কারণে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ‘ব্যয় রিটার্ণ’ সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়ার বিধান রযেছে। সেইসাথে এফিডেভিটের অনুলিপিও ইসি সচিবালয়ে পাঠানোর কথা। এ সময়ের মধ্যে যারা নির্বাচনী হিসাব জমা দেননি- আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে রিটার্নিং অফিসার। এরশাদও সেই আইনের আওতায় পড়েছেন বলে জানা গেছে। সূত্র: আলোকিত বাংলাদেশ