দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এটিএম বুথে টাকা তুলতে হয় তা আমরা জানি। কিন্তু এবার এই এটিএম বুথ থেকে তোলা যাবে পানি! তবে এটি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ঘটনা।
সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, বুথে ঢুকে নির্দিষ্ট কার্ড প্রবেশ করালেই অমনি বেরিয়ে আসছে পানি! আমারা সাধারণত টাকা তুলতে এতদিন এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করতাম। ভারতের নয়াদিল্লিতে বিশুদ্ধ পানি বণ্টনের জন্য পানির এটিএম ব্যবহার করা হচ্ছে বলে সিএনএন-এর খবরে বলা হয়েছে।
সিএনএনের ওই খবরে জানানো হয়, বছর কয়েক আগেও পানির জন্য দিল্লিবাসীর হাহাকার ছিল। ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যেও পানির জন্য লাইন দিয়ে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকতে হতো নয়াদিল্লিতে। এমন এক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে ২০১৩ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ‘সর্বজল’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। সবার জন্য পানির সুবিধা কীভাবে নিশ্চিত করা যায় সেটি নিশ্চিত করার জন্যই মূলত এই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়।
সিএনএন আরও জানিয়েছে, ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বিশুদ্ধ পানির সুবিধাবঞ্চিত ভারতের প্রায় ১৫ কোটি মানুষ। আবার রাতারাতি এ সমস্যার সমাধান করাও সম্ভব নয়। এমন এক পরিস্থিতিতে প্রয়োজন পড়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। তাই ওই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। অত্যন্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে দিল্লি শহরে পানি সমস্যার সমাধান করতে প্রথম পর্যায়ে সরকার ৫০০টি ‘ওয়াটার এটিএম’ স্থাপনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে।
অভিনব এ ভাবনাটির যাত্রা শুরু করা হয় ২০১৩ সালে। প্রথমে পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসেবে ‘সর্বজল’ নয়াদিল্লির একটি পুনর্গঠিত কলোনিতে ১৫টি ওয়াটার এটিএম বুথ স্থাপন করা হয়। ১ রুপিতে মিলতো ৪ লিটার পানি। আর এটি ছিল ভারতের জীবনযাত্রায় বেশ সস্তাও।
‘সর্বজল’-এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক অমিত মিশ্র সংবাদ মাধ্যমকে জানান, প্রথম দিকে মানুষের মধ্যে তেমন একটা সাড়া ছিল না। তারা বিষয়টি বুঝতেই চাইতো না। এই এটিএমের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহের উপকারিতা সম্পর্কে দিনের পর দিন তাদের ব্যাপকভাবে বোঝানো হয়। একসময় বাসিন্দারা বিষয়টি বুঝতে শুরু করলেন। এখন সবার কাছেই বিষয়টি পরিষ্কার। এখন মানুষ এটিএম বুথে গিয়ে পানি সংগ্রহ করছেন।
ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘এখন আর পানি নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হয় না। ইচ্ছামতো যখন খুশি পানি নিতে পারি।’ কারণ, তার আছে রিচার্জেবল স্মার্টকার্ড। অর্থ ভরে নিজের প্রয়োজনমতো বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহের এক সহজ উপায়। এখন অর্থ দিয়ে কার্ড কিনে- নিজের প্রয়োজন অনুসারে বিশুদ্ধ পানি কিনে নেওয়া গ্রাহকের হাতের মুঠোয়। এধরনের প্রকল্প আমাদের দেশেও কার্যকর করা যেতে পারে। আমাদের দেশেও পানির অনেক সমস্যা রয়েছে। বিশেষ করে রাজধানীর অনেক সুবিধা বঞ্চিত মানুষ পানি পান না। এমন প্রকল্প হয়তো সেসব সুবিধা বঞ্চিতদের সমস্যা সমাধানে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।