ঈশ্বরদী প্রতিনিধি ॥ ২ জনের মৃত্যু এবং অর্ধশতাধিক গ্রামবাসীর আহতের পর ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন চত্বর এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মামলা এবং পাল্টা মামলার কারণে গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ এখন এলাকাছাড়া।
গত শুক্রবার ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে ট্রেনের টিকেট কাটাকে কেন্দ্র করে স্টেশন সংলগ্ন ডহরশৈল গ্রাম এবং মৌবাড়ী গ্রামের লোকজনের মধ্যে দিনভর সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়গ্রামবাসী। বাইপাশ স্টেশন চত্বর রূপ নেয় এক রণক্ষেত্রে। পরে পাবনা থেকে রিজার্ভ পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ণ্ত্রণে নিয়ে আসে।
জানা গেছে, ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনকে কেন্দ্র করেই টিকেট চোরাকারবারির একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা আন্ত:নগর ট্রেনের টিকেট আগেভাগেই কেটে নিয়ে নিজেদের সংগ্রহে রাখে। এদের সাথে স্টেশনের টিকেট বিক্রেতাদের গোপন যোগসাজশ রয়েছে বলে অনেকে জানিয়েছেন।
ঈশ্বরদী শহর থেকে ২ কি.মি. দূরে বাইপাস স্টেশন বলে শহর থেকে লোকজনকে অনেক কষ্ট করে এখানে টিকেট কাটতে আসতে হয়। টিকেট কাউন্টারে এসে দেখা যায় টিকেট নাই। টিকেট না পেয়ে ট্রেন যাত্রীরা অগত্যা চোরাকারবারিদের খুঁজতে থাকেন। তাদের খোঁজ মেলে স্টেশন সংলগ্ন চায়ের দোকানগুলিতে। অবশেষে টিকেট পাওয়া গেলেও তার মূল্য হাকা হয় অনেক বেশি। অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে অবশেষে একটা সমঝোতায় আসার পর যাত্রীরা টিকেট কিনে নেয় চোরাকারবারিদের কাছ থেকে। এভাবেই চোরাকারিবারির একটি সিন্ডিকেট বানিয়ে ট্রেন যাত্রীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে প্রচুর অর্থ। এ ব্যাপারে স্টেশন মাষ্টারের কাছে বহুবার অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি। ইতিপূর্বেও ট্রেনের টিকেট পাওয়া, না পাওয়াকে কেন্দ্র করে এই স্টেশনে গ্রামবাসীর মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে। তবে এবারের এই সংঘর্ষের মাত্রা অন্যান্যবারের চেয়ে অনেক বেশি। টিকেট নিয়ে সংঘর্ষে ২ জনের মৃত্যু এবং অর্ধশতাধিক গ্রামবাসীর আহত হওয়ার ঘটনা এলাকাবাসীর মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বর্তমানে পুলিশ পাহারা থাকায় পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত।