দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশে বর্তমানের বড় সমস্যা বেকারত্ব। অনেক বেশি সংখ্যক শিক্ষিত যুবক বেকার থাকায় এবং চাকরীর সুযোগ কম থাকায় প্রতিযোগিতা চুড়ান্ত পর্যায়ে। এমতাবস্থায় সকলেই দিশেহারা। চাকরীর পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও ভাইভাতে ঝরে যায় অনেকে। চাকরীর জন্য ইন্টার্ভিউ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চাকরীর ইন্টার্ভিউ ভালো করতে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন।
সচরাচর চাকরীর ইন্টার্ভিউ খুব কম সময়ব্যাপি হয়। এই অল্প সময়ে নিজেকে ঠিকভাবে জাহির করতে না পারলে আপনি ব্যর্থ হবেন। কারণ সিলেকশন বোর্ড আপনাকে চিনে না। তাই মূল বিষয় হল, অল্প সময়ে নিজেকে প্রমাণ করা। অবশ্যই কিছু আনুষাঙ্গিক বিষয়ে নজর দিতে হবে। কি সেগুলো?
ড্রেস-আপঃ
চাকরীর ইন্টার্ভিউ দিতে যাবেন। এরজন্য ড্রেস-আপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। অবশ্যই ফর্মাল পোশাক পরে যাবেন। রংচঙে জামা কাপড় পরবেন না। সাধারণ কাপড়ের মধ্যে যেগুলোতে আপনাকে মানায় এবং স্মার্ট লাগে সেগুলো পরবেন। ছেলেদের ক্ষেত্রে, ফর্মাল প্যান্টের সাথে ফর্মাল শার্ট ইন করে পরবেন। প্যান্টের কালার ডিপ হলে ভাল। আর শার্ট পরবেন হালকা কালারের। সুন্দর চামড়ার বেল্ট পরবেন। আর পেয়ে দিবেন মানানসই সু। আর মেয়েরা শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ যাই পরুন না কেন খেয়াল রাখবেন পোশাক যাতে সিম্পল হয় এবং আপনাকে মানায়। হাইহিল না পরে সাধারণ স্যান্ডেল পোশাকের সাথে ম্যাচ করে পড়তে পারেন। প্রত্যেকেই চুল কেটে পরিপাটি করে আঁচড়াবেন।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাঃ
ছেলেরা অবশ্যই শেইভ করে যাবেন। শেইভ করার পর আফটার শেইভ লাগাবেন। তবে যারা দাড়ি রেখেছেন তারা পরিপাটি করে তা কেটে যাবেন। নখ কেটে ফেলুন। পোশাকের পাশাপাশি শারিরিক পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করুন। মেয়েরা নখে হালকা কালারের নেইল পালিশ লাগাতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে সবাই হালকা পারফিউম লাগাতে ভুলবেন না। মনে করে টিস্যু নিয়ে যাবেন। ঘর্মাক্ত হয়ে রুমে ঢুকবেন না। আপনার ইন্টার্ভিউ দেরিতে হলে ওখানেই একবার ফ্রেশ হয়ে নিতে পারেন।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র আগের রাতে একটি ফাইলে ঢুকিয়ে রাখুন। সকল পরিক্ষার সার্টিফিকেট, মার্কশিট আর ছবি সত্যায়িত করে রাখবেন। তবে এইক্ষেত্রে যেখানে ইন্টার্ভিউ দিচ্ছেন তাদের চাহিদা মোতাবেক কাগজ নিতে হবে। তাই ওয়েবসাইট বা হিউম্যান রিসোর্সে যোগাযোগ করে জেনে নিন কি কি কাগজপত্র লাগবে।
সময়ানুবর্তীতাঃ
ইন্টার্ভিউ দিতে যথেষ্ট সময় হাতে রেখে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। পারলে পাবলিক পরিবহনে না গিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি বা রিক্সায় যান। এতে ঠেলাঠেলি এড়িয়ে চাপমুক্ত হয়ে যেতে পারবেন। কোন সামান্য বিশয়ই যেন আপনার মনের মধ্যে প্রভাব না ফেলে। ইন্টার্ভিউতে আপনার ডাক পড়লে বিন্দুমাত্র দেরি করবেন না।
আত্মবিশ্বাস বজায় রাখুনঃ
ইন্টার্ভিউ কক্ষে প্রবেশ করে ভয় পেলে চলবে না। আত্মবিশ্বাসের সাথে তাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন। কোন উত্তর জানা না থাকলে বলবেন, সরি স্যার। সহজ ভাষায় সবগুলো উত্তর দিন। অবশ্যই বাংলা ইংরেজি মিশিয়ে ফেলবেন না। শুদ্ধ ভাষায় কথা বলবেন। অনেকের ভুল ধারণা ইন্টার্ভিউতে ইংরেজিতেই উত্তর দিতে হবে। আদতে তা ঠিক নয়। ইন্টার্ভিউ বোর্ডের মেম্বার যে ভাষায় প্রশ্ন করবে সে ভাষায় উত্তর দিন। অবশ্যই ভুল বা আন্দাজে উত্তর দিবেন না।
সৌজন্যতা বজায় রাখুনঃ
সালাম দিয়ে অনুমতি নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করুন। কক্ষে সৌজন্যতা বজায় রাখবেন। অনেকেই নিজের সমস্যা বলে সহানুভূতি নেওয়ার চেষ্টা করেন। এটা খুবি ভুল কাজ। নিজেকে শক্ত সমর্থ দেখানোই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কোন প্রশ্ন নিয়ে পেঁচাবেন না। অবশ্যই তর্ক করবেন না। তবে আপনার বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষা করতে এমন প্রশ্ন করলে চতুরতার সাথে নিজ মতামত প্রকাশ করুন।
নিজেকে পরিপূর্ণ করে ইন্টার্ভিউ দিতে যাবেন। আত্মবিশ্বাস রাখুন, নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন। সাফল্য আসবেই। সকল চাকরী প্রার্থীদের জন্য শুভকামনা থাকল।