দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোরবানীর ঈদ এলে কোরবানীর চামড়া নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ চামড়া সম্পর্কে আমাদের তেমন কোনো ধারণা নেই। অথচ এই চামড়া সংরক্ষণ বা বিক্রির জন্য সঠিকভাবে প্রস্তুত রাখা দরকার।
ফাইল ছবি
কোরবানীর চামড়া আমরা কোনো মাদ্রাসার লিল্লাহ বোর্ডিং অথবা তা বিক্রি করে গরীব দুখিদের দিয়ে থাকি। কিন্তু এই চামড়া সংরক্ষণ বা এর রক্ষণাবেক্ষণ কিভাবে করতে হয় তা আমাদের জানা নেই। কারণ গরু বা ছাগল জবাই করার পর চামড়া ছাড়ানোর সময় চামড়া নষ্ট হলে তা বাতিল অথবা কম দামে বিক্রি করতে হয়। সেজন্য সঠিক পদ্ধতি আমাদের জানা একান্ত দরকার। এর প্রধান কারণ হলো প্রচুর গরু-ছাগল কোরবানী করার কারণে সবগুলোকে কসাই দ্বারা কাজ করানো সম্ভব হয় না। অনেক সময় নিজেরা বা অনভিজ্ঞ লোক দিয়ে কাজ করানো হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে চামড়া ফুটো হয়ে গেলে তা বাতিল বা কমদানে বিক্রি করতে হয়।
নিন্মোক্ত বিষয়গুলো খেয়াল রাখা একান্ত দরকার:
# কোরবানীর পশু কেনার সময় ভালোভাবে লক্ষ্য রাখুন, আপনার কোরবানীর জন্য পছন্দ করা পশুটির গায়ে কোন ক্ষত আছে কিনা।
# হাট বা বাজার হতে পশুকে বাড়িতে নিয়ে আসার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে টানা-টানির সময় চামড়ার কোনো ক্ষতি না হয়।
# অনেক সময় ঈদের বেশ কয়েকদিন আগে পশু কিনে ফেলার প্রয়োজন পড়ে সেক্ষেত্রে ঈদের কয়েকদিন আগে কোরবানীর পশু কিনলে পশুটি রাখার স্থানের মেঝের উপর খড় বা চট বিছিয়ে দিতে হবে। যাতে পশুটির গায়ে কোনোভাবে আঘাত না লাগে। এতে যেমন চামড়ার ক্ষতি হবে না তেমনি পশুটির যত্নও নেওয়া হবে।
# কোরবানীর দিন জবাইয়ের সময় সকালে পশুটিকে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়াতে হবে। কখনও খড় বা ভূসি খাওয়ানো যাবে না। এতে করে পশুটির চামড়া ছাড়ানো অত্যান্ত সহজসাধ্য হবে।
# পশু কোরবানি দেওয়ার বা মাংস বানানোর স্থানটি যেনো এবড়ো-থেবড়ো অথবা গর্তযুক্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
# কোরবানীর পশু জবাই এবং চামড়া ছাড়ানোর জন্য আগে থেকেই অভিজ্ঞ বা পারদর্শি এরকম কাওকে কাজটির দায়িত্ব দিয়ে রাখুন। অনভিজ্ঞ লোক দিয়ে কাজ করালে চামড়ার ক্ষতি হতে পারে।
# জবায়ের জন্য আগে থেকেই ধারালো ছুরির ব্যবস্থা রাখুন। কারণ ভোতা ছুরি দিয়ে কাজ করা বড়ই কঠিন।
# যদি খাসি কোরবানী করেন সেক্ষেত্রে পশুকে শক্ত কোনো খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে দিলে চামড়া ছাড়ানো সহজ খুব সহজ হবে।
# পশুর চামড়া ছাড়ানোর পর লেগে থাকা রক্ত ও চর্বি যত দ্রুত সম্ভব সরিয়ে ফেলুন। না হলে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে পচন ধরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। পরিষ্কার স্থানে চামড়াটি রাখুন
# কোরবানীর চামড়া ছাড়ানোর ৩ হতে ৪ ঘণ্টার মধ্যে তা বিক্রি করা না গেলে এটি দ্রুত সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা উচিত। লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করা সবচেয়ে সহজ সনাতন পদ্ধতি। সাধারণত চামড়ার ওজনের বিশ শতাংশ হারে লবণ ব্যবহার করা দরকার। অর্থাৎ চামড়ার ওজন ১৫ হতে ২০ কেজি হলে লবণ ব্যবহার করতে হবে ৩ হতে ৪ কেজি।
এভাবে কোরবানীর পশুর চামড়া আমরা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে পারি। যাতে কোনো খুত না থাকে। কারণ এটি গরীব দুখিদের হক।