দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দুবাইয়ে বাংলাদেশী নারী সাফিয়া গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে ৫ বছর ধরে এক বাড়ীতে কজাজ করছেন, সম্প্রতি সমুদ্রের অথৈ পানিতে প্রায় তলিয়ে যাওয়া চার শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের প্রাণ দিলেন সাফিয়া।
ঘটনাটি ঘটে আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির একটি সমুদ্রসৈকতে, আরবের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এই খবর ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। অভিভাবকদের অসতর্কতায় আবুধাবির দাবিয়া সমুদ্রসৈকতের পানিতে নেমে পোরে ৪ শিশু। এসময় অভিবাবকরা উদাসীন ছিলেন বলে জানা যায়। সাফিয়া শিশুদের পানিতে নেমে যেতে দেখে চারদিকে সাহায্য আহ্বান করেন। কিন্তু কেউই তার ডাকে সাড়া না দিলে এই সময়ের মাঝেই ৪ শিশু আরো গভীরে নেমে যায়। এতে করে তীব্র ঢেউ শিশুদের ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো দেখে সাফিয়া নিজেই নেমে পড়েন শিশুদের বাঁচাতে। এর মাঝে ঢেউ আরো তীব্র হয়। সাফিয়া একে একে ৪ শিশুকে তীরে টেনে আনেন এবং নিজে যখন তীরে উঠবেন ঠিক সে সময় বিশাল স্রোত তাকে টেনে নিয়ে যায়।
সাফিয়া স্রোতের সাথে একাই লড়তে থাকেন এবং সমুদ্রের প্রবাল পাথরে আঘাত খেতে থাকেন, আঘাতে রক্তাক্ত সাফিয়া শেষে নিজেকে সামলিয়ে তীরে উঠতে সমর্থ হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। হাসপাতালে নেয়ার আগেই তিনি অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে মারা যান।
এই ঘটনায় জানা যায় ৪ শিশুর মাঝে এক জনের বাবা এবং সাফিয়ার মালিক আবু আবদুল্লাহ। তিনি ঘটনা স্থলে ছিলেন এবং সাফিয়ার পরবর্তী সকল দায়িত্ব নিয়েছেন। এছাড়াও আরো ৩ শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে সাফিয়ার পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবু আবদুল্লাহ বলেন সাফিয়া আমার বাসায় গত ৪ বছর কাজ করে আসছে। সম্প্রতি সে তার মেয়ের বিয়ে দিতে দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলো। তবে তার মেয়ের বিয়ে দেখা হলোনা। আমরা তার লাশ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি এবং তার এই কাজের জন্য আমরা তার কাছে চির ঋণী হয়ে থাকব।
সাফিয়ার এই ঘটনা এমিরেটস ডটকম সহ আরোবের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বীরত্ব হিসেবেই প্রকাশিত হয়েছে।