দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের কত রকমের শখ থাকে তা বোঝার উপায় নাই। দেশ-বিদেশ বেড়ানো, পাখি শিকার করা এমন আরও কত শখ রয়েছে। কিন্তু এক প্রকৃতিবিদের এক অভিনব শখ হয়েছিল- সেটি হচ্ছে স্বেচ্ছায় সাপের পেটে যাওয়া।
প্রকৃতি প্রেমি অনেকেই রয়েছেন যারা শখের বসে অনেক কিছুই করে বসেন। এমনই একটি ঘটনার খবর এটি। পৃথিবীর বুক থেকে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আমাজনের বৃষ্টি অরণ্য। সবার কাছে বিষয়টি তুলে ধরতে ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন প্রকৃতিবিদ পল রসোলি। কিন্তু মানুষ কখনও এমনি এমনি কিছু শুনতে চায় না। চমকপ্রদ কিছু দেখাতে পারলে তবেই সবার দৃষ্টিতে আসা যায়। সে রকম একটা চমক দেখাতেই স্বেচ্ছায় সাপের পেটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এই প্রকৃতিপ্রেমি। যে সে সাপের পেটে নয়, সুবিশাল এক অ্যানাকোন্ডার পেটে। পলকে ওই সাপের গলাধঃকরণের পুরো দৃশ্যটাই ক্যামেরায় ধারণ করা হলো।
বার্তা সংস্থা এএফপি খবরে বলা হয়, অ্যানাকোন্ডাটি রসোলিকে জীবন্ত গিলে ফেললো। আধাঘণ্টার মতো সাপটির পেটে ছিলেন প্রকৃতিবিদ পল রসোলি। এই দৃশ্যের প্রতিটি মুহূর্তই ধারণ করা হয় ভিডিও ক্যামেরায়।
তুমুল এক মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল তার। কিন্তু শেষমেশ জীবিত অবস্থায় অ্যানাকোন্ডার পেট থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন এই একনিষ্ঠ পরিবেশবিদ পল রসোলি।। রোমহর্ষক এই ঘটনার ওপর নির্মিত তথ্যচিত্রটি রবিবার হতে ডিসকভারি চ্যানেলে প্রচারিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, প্রায় এক দশক ধরে পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন প্রকৃতিবিদ পল রসোলি। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, পৃথিবীর সবাই জানেন, ক্রান্তীয় অঞ্চলের বনগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। বনের গুরুত্বের কথা অনেকেই বলতে পারলেও এখনও অনেকেই ব্যাপারটিতে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। বহু মানুষ এই সমস্যা অনুধাবনও করতে পারছেন না। দুঃসাহসিক এই অভিযানে অংশ নিতে পেরে পল রসোলি গর্বিত।
ঘটনার বিবরণ হতে জানা যায়, অ্যানাকোন্ডার পেটে যাওয়ার জন্য শ্বাসরোধ ঠেকানোর জন্য রসোলির জন্য বিশেষ পোশাক তৈরি করেন বিশেষজ্ঞরা। ওই পোশাকে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থাও ছিল। আরও ছিল ক্যামেরা এবং যোগাযোগব্যবস্থা।
অ্যানাকোন্ডার পেটে আধাঘণ্টার মতো অবস্থান করেন পল রসোলি। পুরো সময় রসোলি তার দলের অন্য সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। কিন্তু তিনি আসলে কিভাবে সাপের পেট হতে বেরিয়ে এসেছেন- এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছুই জানানো হয়নি। তবে এই প্রকৃতিবিদ পল রসোলি দাবি করেছেন, সাপটির কোনো ক্ষতি না করেই তিনি বের হয়েছেন।
তথ্যচিত্র হতে পাওয়া অর্থ সচেতনতা এবং পরিবেশ সংরক্ষণে ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছেন রসোলি। অবশ্য রসোলির এমন কাজের কড়া সমালোচনা করেছেন প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা গোষ্ঠীগুলো। প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা গোষ্ঠীগুলো বলছে, এটি কোনো কাজের কাজ হতে পারে না। এটি নেহায়তই একটি পাগলামো ছাড়া কিছু নয়।