দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ট্রেন চালু করে চালকের পালায়নের মতো ঘটনা ঘটেছে। ট্রেনটি উল্টোপথে ২৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পর অল্পের থেকে রক্ষা পেয়েছে ‘ফরিদপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, রাজবাড়ী হতে ফরিদপুরগামী ‘ফরিদপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনের চালক ট্রেনটি চালু করে ব্যাক গিয়ার দিয়ে সহকারী চালকসহ পালিয়ে যান। এতে ট্রেনটি উল্টো পথে প্রায় ২৬ কিলোমিটার যাওয়ার পর ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) কৌশলে সেটি থামাতে সক্ষম হন। আজ রবিবার সকালে এই ঘটনা ঘটে। চালক মোহাম্মদ আলীকে পরে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে।
উল্টোদিকে যাওয়া ফরিদপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি থামান টিটি আনোয়ার হোসেন। তিনি জানান, ট্রেনটি রাজবাড়ী স্টেশন হতে সকাল ০৮.১০ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি সকাল ০৮.৪ মিনিটে ফরিদপুরের দিকে না গিয়ে উল্টো পথে অর্থাৎ কুষ্টিয়ার দিকে চলা শুরু করে। এ সময় ট্রেনে বেশ কিছু যাত্রীও ছিলেন।
টিটি আনোয়ার বলেন, উল্টো পথে চলায় প্রথমে তিনি ভাবেন, হয়তো পানি নিতে বা লাইনের পয়েন্ট ঠিক করতে সেটি পেছনের দিকে চলছে। কিন্তু পয়েন্ট ঠিক করার সীমানা পার হয়েও উল্টো দিকে চলতে থাকার পর যাত্রীরা হইচই শুরু করে দেন। তখন তিনি ট্রেনটিকে থামাতে সংকেত দিতে থাকেন। তারপরও ট্রেনটি না থামায় তিনি শেকল টেনে ধরেন। তারপরও ট্রেনটি না থেমে উল্টো দিকে চলছিল। তাই তিনি ট্রেনটিকে থামাতে কী-বক্স খুলে ভ্যাকম বক্স হতে বাতাস ছেড়ে দেন। ভ্যাকম বক্সের বাতাস ট্রেনটিকে চলতে ও থামাতে সহযোগিতা করে। ট্রেনটি চলার সময় ভ্যাকম বক্সগুলো বায়ুপূর্ণ করা হয়। এতে বগিগুলো হালকা হয়। যে কারণে বগিগুলোকে ইঞ্জিন সহজেই টেনে নিতে পারে। আবার থামানোর সময় ভ্যাকম বক্স আস্তে আস্তে বায়ুশূন্য করা হয়। এতে বগিগুলো ক্রমশ ভারী হয়। যে কারণে ট্রেনটি থেমে যায়।
টিটি আনোয়ার আরও বলেন, ৩টি বগির ভ্যাকম বক্স খুলে বায়ুশূন্য করার পর বগিগুলো ভারী হয়ে যায়। তখন ইঞ্জিন সেগুলোকে আর টানতে না পারায় প্রায় ২৬ কিলোমিটার যাওয়ার পর পাংশা উপজেলার বাবুপাড়া সেতুর কাছে ট্রেনটি থেমে যায়। কিন্তু ট্রেনের ইঞ্জিনটি তখনও সচল ছিল। এরপর ০৯.০৪ মিনিটে তিনি ইঞ্জিনটি বন্ধ করতে সমর্থ হন।
রাজবাড়ী রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মো. কামরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনার পর থেকে ট্রেনটির চালক মোহাম্মদ আলী ও সহকারী চালক ফয়সাল পলাতক। ট্রেনটির পরিচালক সুভাস চন্দ্র শর্মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ট্রেনের চালক, সহকারী চালক ও পরিচালককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ট্রেনটির চালক মোহাম্মদ আলীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে সর্বশেষ সংবাদে জানা গেছে।