দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা সিনেমাতে দেখেছি মৎস্য কন্যার কাহিনী। কিন্তু তাই বলে বাস্তবে? আজ রয়েছে এক মৎস্যকন্যার কাহিনী!
মৎস্যকন্যার গল্প পড়ে কল্পনার জগতে নিজেকে সমুদ্রে সাঁতরাতে দেখেছে অনেক মেয়েই। মোহনীয় কল্পনার তাড়না মানুষকে যে কত দূর-দূরান্তে নিয়ে যেতে পারে, তার প্রমাণ পৃথিবী অনেকবার পেয়েছে। কল্পনার শক্তি এতটাই বেশি যে, তা স্বপ্নকে সত্যি করে দিতে পারে খুব সহজেই।
আজকের গল্প এগুলো নিয়েই, এরা প্রকৃতপক্ষে নিজেদের মৎস্যকন্যা হয়ে ওঠার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। সত্যিকারের মৎস্যকন্যা হয়ে ওঠার স্বপ্ন নিয়েই বেড়ে উঠেছেন ক্যাজি মাহিনা। বিশ্বের ১টি বিচ্ছিন্ন প্রান্তের বাসিন্দা হয়েও এ মৎস্য কন্যার স্বপ্ন একটাই, আর তা হলো সাগরতলে মৎস্যকন্যা হয়ে ঘুড়ে বেড়ানো।
ক্যাজি মাহিনা। ক্যাজি রিয়েল লাইফ মারমেইড নামে পরিচিত। ৩৭ বছর বয়সী ক্যাজি মাহিনা বেড়ে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের দক্ষিণ উপকূলে। ছোটবেলা হতেই ক্যাজি ভালোবাসতেন সমুদ্রকে। সমুদ্রের বিভিন্ন প্রাণী এবং তাদের জীবন ক্যাজিকে খুব মুগ্ধ করতো। বরাবরই ভালো সাঁতারু ছিলেন ক্যাজি। খুব সহজেই কয়েক মিনিটের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ রাখতেও পারেন। ছোটবেলায় নিজের পা দু’টোকে এক সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেধে সমুদ্রে সাঁতার কাটতেন ক্যাজি।
সেই ২০০৫ সালের কথা। ক্যাজি ডলফিনের সঙ্গে সাঁতার কাটার আমন্ত্রণ পান। সেসময় তিনি রূপালি রঙের কৃত্রিম লেজ পরে সাঁতার কাটতেন। এ প্রতিযোগিতাটিই পরবর্তীতে তাকে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ভ্রমণের উৎসাহ যোগায়।
ওই ভ্রমণ শেষে অস্ট্রেলিয়া ফিরে ক্যাজি সিদ্ধান্ত নেন, প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে মিলিয়ে তিনি তার জন্য লেজ তৈরি করবেন। সিলিকন এবং আঠা দিয়ে তৈরি এই লেজ যেনো দেখতে বাস্তব লাগে সেভাবেই নকশা করা হবে। ক্যাজির এই লেজ তৈরিতে সময় লেগেছিল প্রায় একবছর।
একইসঙ্গে তিনি ক্যাজি মাহিনা মারমেইড নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন যা সমুদ্রে সাঁতার কাটার উপকরণ হিসেবে শিশুদের জন্য ফ্লিপার এবং বয়স্কদের জন্য মারফিন তৈরি করে তাকে। ক্যাজি এখন বেশির ভাগ সময়ই কাটান সমুদ্র রক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মে। তিনি তার লেজ তৈরির কাজকে সমুদ্রের সঙ্গে মানুষের সংযোগ হিসেবেই দেখে থাকেন।
ক্যাজিকে সমুদ্রের বড় বড় হিংস্র প্রাণীরাও দমিয়ে রাখতে পারেনি। ক্যাজি যখন ৬ মাসের অন্তঃসত্বা, তখন নিউজিল্যান্ডের একটি অ্যাকুয়ারিয়ামে তাকে হাঙরের সঙ্গে সাঁতার কাটার আহ্বান জানানো হয়েছিল। শুধু তাই নয়, তখন ছিল খুব ঠাণ্ডা আর অ্যাকুয়ারিয়ামের পানিও ছিল ঘোলাটে। কিন্তু ক্যাজি সে আহ্বানে বেশ উৎসাহী ছিলেন। এভাবেই ক্যাজি ম্যাহিনা মৎস্যকন্যা হিসেবে গড়ে ওঠেন। তাকে সিনেমার মৎস্যকন্যা নয়, বাস্তবের মৎস্যকন্যা হিসেবেই পরিগণিত করা হয়।
দেখুন ভিডিওটি