দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতে ট্রেনে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় বেরিয়ে এসেছে লোমহর্ষক কাহিনী। হত্যার পূর্বে চোখ ও কিডনি উপড়ে নেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশী নারী নার্গিসের!
ভারতের ট্রেনে গণধর্ষণ ও হত্যার খবর প্রকাশের পর সংবাদ মাধ্যমে তা ফলাও করে প্রকাশ করা হয়। প্রথমে বাংলাদেশের নাগরিক সেটি উল্লেখ করা না হলেও পরে বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। ওই গণধর্ষণের শিকার বাংলাদেশী নার্গিসের শরীর হতে চোখ ও কিডনি উপড়ে নেওয়া হয়েছিল। এমন লোমহর্ষক তথ্য দিয়েছেন তার মামী রাহেলা বেগম।
৯ মার্চ নার্গিসের চিকিৎসা করানো ও আজমির শরীফ দেখার জন্য পাসপোর্ট এবং ভিসা করে মা আনোয়ারা বেগম, নার্গিস ও কাকলী বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। তারা ট্রেনে বনগাঁ, শিয়ালদা হয়ে হাওড়া পৌঁছান। পরদিন ট্রেনে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা করেন। ১০ মার্চ রাত সাড়ে ৩টার দিকে কয়েকজন যুবক ভুল বুঝিয়ে ট্রেন দিল্লি স্টেশনে চলে এসেছে বলে মা এবং মেয়েকে নামিয়ে দেন। বগির মধ্যে কয়েকজন বখাটে যুবক নার্গিসের মুখ চেপে ধরে রাখে। ইতিমধ্যেই ট্রেন ছেড়ে দেয়। এরপর ৩ দিন আনোয়ারা এবং কাকলি কানপুর স্টেশনে অপেক্ষা করেও মেয়ের কোনো সন্ধান পায়নি। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় তারা দেশে ফিরে আসেন তারা। এরপর ১৯ মার্চ খুলনার সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ তাদের খবর দেয় নার্গিসের মৃতদেহ ভারতে রেল স্টেশনের কাছে পাওয়া গেছে। ২০ এপ্রিল তার লাশ বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়।
নার্গিসের অন্ধ মা ও মেয়ে
রাহেলা বেগম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতের পুলিশ নার্গিসের লাশ ৪১ দিন পর সোমবার ফেরত দিয়েছে। যারা মরদেহের গোসল করিয়েছে তারা অামাকে জানিয়েছেন, নার্গিসের ২টি চোখই তুলে নেওয়া হয়েছে। তার বামপাশের স্তন কাটা ও পিঠের নিচে কেটে কিডনি বের করে নেওয়া হয়। এছাড়া একটি হাত ও একটি পা ভাঙ্গা। তার শরীরের একাধিক স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল।’
তিনি আরও জানান, ভারতীয় পুলিশ তাদের ময়নাতদন্তের কোনও প্রতিবেদনও দেয়নি। বর্বরোচিত এই হত্যা এবং গণধর্ষণের সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণরে জন্য তারা খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের নিকট আবেদন করেছেন বলেও জানান।
আক্ষেপ করে রাহেলা বেগম বলেন, ‘পাসপোর্ট-ভিসা করে তারা ৩ জন বৈধভাবে ভারত গিয়েছিল। তবু তাদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হলো ভারত সরকার। নিরাপত্তাহীনতার কারণে প্রাণ দিতে হলো নার্গিসকে। গণধর্ষণ এবং নৃশংস নির্যাতনের পর তাকে হত্যা করা হয়েছিল। ভারতে চিকিৎসা করাতে ও আজমির শরীফ দেখতে যাওয়ার পর লাশ হয়ে ফিরতে হলো তাকে।’
নিহত নার্গিসের জন্মান্ধ বৃদ্ধা মা আনোয়ারা বেগম বলেছেন, ‘কতো মানুষতো বিদেশে যায়। কারও তো কখনও এমন হয় না। এই বাচ্চা মেয়েটারে নিয়ে এখন আমি কি করবো?’
এমন অনেক প্রশ্নই আজ সবার কাছেই। এমন অমানবিক নির্যাতন করে যারা নির্মমভাবে নার্গিসকে হত্যা করেছে তাদের বিচারকি কখনও হবে না?