দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের বসবাসের স্থান হলো বাড়ি বা ঘর। কিন্তু সেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে কেও যদি ট্রেনে বসবাস করে তাহলে বিস্মিত না হয়ে পারা যায় না। এক কলেজ ছাত্রী ঘর ছেড়ে বসবাস করেন ট্রেনে!
আমরা জানি ট্রেন স্টেশনে পৌঁছানোর পর সবাই নিজ নিজ গন্তব্যে যাওয়ার জন্য নেমে যান। এটিই স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু এক কলেজ ছাত্রীর ক্ষেত্রে ঘটেছে এর ব্যতিক্রম। কারণ সবাই ট্রেন থেকে নেমে গেলেও তিনি থেকে যান ট্রেনেই। কারণ তার ঘরই এখনস ওই ট্রেন।
এই কলেজ ছাত্রীর নাম লিওনি মুলার। ট্রেনের বগিকেই তিনি এখন নিজের বাসা মনে করেন। জার্মানের এই কলেজ ছাত্রী লিওনি গত বসন্তে নিজের অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে দিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ট্রেনে। অর্থাৎ এখন ট্রেনই তার বাড়ি-ঘর।
লিওনি ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বাড়িওয়ালার সঙ্গে বিরোধের কারণে বাসা নিয়ে প্রথম সমস্যাটা শুরু হয়। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিই আমি ওই বাসায় আর থাকবো না। আমি বুঝতে পারি, আমি আসলে আর কোনোখানেই থাকতে চাচ্ছি না।’
সে কারণে এক ফ্ল্যাট ছেড়ে অন্য ফ্ল্যাট খোঁজার বদলে লিওনি এমন এক সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজ কিনলেন। এই প্যাজেটির মাধ্যমে দেশের যে কোনো রুটের রেলগাড়িতে তিনি যখন খুশি তখন চড়তে পারবেন- পৃথক কোনো ভাড়া ছাড়াই। আর সেই থেকে ট্রেনকেই তিনি তার বাড়ি-ঘর বানিয়ে রেখেছেন!
লিওনি ট্রেনের বাথরুমেই সারেন গোসলসহ রোজকার কাজকর্ম। প্রতিঘণ্টায় ১শ’ ৯০ মাইল বেগে চলন্ত ট্রেনের বগিতে বসে তিনি করেন লেখাপড়া। আগে থাকা ফ্ল্যাটবাড়িগুলোর তুলনায় এই ‘ট্রেন-বাসা’য় নিজেকে খুব স্বাধীন মনে করেন লিওনি।
লিওনি আরও বলেন, ‘ট্রেনগুলোকে আমার নিজের বাসাই মনে হয়। অনেক শান্তি পাই এখানে থাকতে। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে আমি বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পারি, বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়াতেও পারি। ব্যাপারটা অনেকটা সবসময় ছুটি কাটানোর মতোই।’
২৩ বছর বয়সী লিওনির ভিন্ন ধরনের জীবনযাত্রার কথা উঠে এসেছে জার্মানির গণমাধ্যমগুলোতে। শহরের আলোচনার এক বিষয় হয়ে উঠেছে তার কাহিনী।
উল্লেখ্য, ট্রেনে বসবাস করে আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন লিওনি। এভাবে ট্রেনে চলাচলে থাকার ভাড়ার পেছনে মাসে তার খরচ হচ্ছে ৩শ’ ৮০ মার্কিন ডলার। অথচ আগের অ্যাপার্টমেন্টে তার মাসিক ভাড়া ছিলো ৪শ’ ৫০ ডলার।