দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ক্যান্সার নিয়ে মানুষের চিন্তার অন্ত নেই। আর তাই গবেষকরাও থেমে নেই। তারা ক্যান্সার কোষকে স্বাভাবিক কোষে রূপান্তরের পদ্ধতি বের করতে পেরেছেন!
এই গবেষণার ফলে ক্যান্সার কোষ বদলে হচ্ছে স্বাভাবিক কোষ! এতে, ভবিষ্যতে ক্যান্সার চিকিৎসায় এক মহাবিপ্লব দেখা দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, শরীরের স্বাভাবিক কোষের মতোই হয়ে থাকে ক্যান্সার কোষ। তবে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি বা বিভাজন ঘটে থাকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে। এ কথা আমরা অনেকেই জানি, অন্যান্য প্রাণীর মতোই মানুষের দেহও অসংখ্য ছোট ছোট কোষ দ্বারা তৈরি। এসব কোষ নির্দিষ্ট সময়ের পর মারা যায় এবং পুরনো কোষের স্থানে স্থান করে নেয় নতুন কোষ। এই কোষগুলো আবার নিয়ন্ত্রিতভাবে ও নিয়মমতো বিভাজিত হয়ে নতুন কোষের জন্ম দেয়।
ক্যান্সার কিংবা কর্কটরোগের ক্ষেত্রে দেহ কোষের বিভাজন চলে অনিয়ন্ত্রিতভাবে। যে কারণে ত্বকের নিচে অনেক সময় মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায়। এটিকেই বলে টিউমার।
মার্কিন খ্যাতনামা মেয়ো ক্লিনিকের গবেষকরা দীর্ঘদিন গবেষণা করে ক্যান্সার কোষকে স্বাভাবিক কোষে রূপান্তর করতে পেরেছেন। গবেষণাগারে এজন্য স্তন ও মুত্রথলির ক্যান্সার কোষ ব্যবহার করেছেন। গবেষক দলকে গবেষণার সময় এই রূপান্তর ঘটানোর জন্য কোষকলা পর্যায়ে তুলামূলকভাবে সহজ হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। আর এর মধ্যদিয়ে ক্যান্সার কোষ আবার স্বাভাবিক কোষের মতই আচরণ করতে শুরু করেছে বলে তারা দেখতে পান। এর অর্থ দাঁড়ায় ক্যান্সার কোষ বদলে হয়ে গেছে শরীরের স্বাভাবিক কোষ!
গবেষকরা দেখতে পান যে, মাইক্রো আরএনএএস দেহ কোষের বিভাজন অথবা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কোষকে পিএলএকেএইেএ৭ নামের আমিষ উৎপাদনের নির্দেশ দেয়। সঠিক মাত্রায় আমিষটি উৎপাদিত হলেই মূলত বন্ধ হয়ে যায় কোষ বিভাজন।
গবেষকরা বলেছেন, ক্যান্সার কোষে সঠিক মাত্রায় থাকে না এই আমিষ। গবেষকরা ক্যান্সার কোষে মাইক্রো আরএনএএস ঢুকিয়ে দেওয়ার পর দেখতে পান সঠিক মাত্রায় এই আমিষ উৎপাদিত হচ্ছে ক্যান্সার কোষে। সেইসঙ্গে ক্যান্সার কোষের অস্বাভাবিক বিভাজনও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ন্যাচার সেল বায়োলজিতে এই গবেষণার বিষয়বস্তু প্রকাশিত হয়।
তেহরান রেডিও খবরের উদ্বৃতি দিয়ে প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ক্যান্সার চিকিৎসায় এই পদ্ধতি প্রয়োগের আগে আরও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। এরপরও গবেষকরা মনে করছেন, ইতিপূর্বে কখনোই ক্যান্সার সারিয়ে তোলার ক্ষেত্রে এতো ব্যাপক আশার সঞ্চার হয়নি।