দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোট্ট একটি খবর সকলকে চমকে দিয়েছে। খবরটি হলো ভারতে নাকি কলেজছাত্রীরা পেটের দায়ে ডিম্বাণু বিক্রি করছে! এও কী সম্ভব?
পেটের দায়ে কঠিন থেকে কঠিনতর কাজ করার অভ্যাস আমাদের রয়েছে। তবে যে খবরটি সকলকে চমকে দিয়েছে সেটি হলো পেটের দায়ে কলেজছাত্রীদের ডিম্বাণু বিক্রি! খবরে বলা হয়েছে, ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যে দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাড় করার তাগিদে কলেজছাত্রীরা ফার্টিলিটি ক্লিনিকগুলোতে নিজেদের ডিম্বাণু বিক্রি করছে। কোনো রকম স্বাস্থ্য সচেতনতা ছাড়াই এমন কর্মটি করছে। এই খবরটি দিয়েছে ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, মূলত দালালদের খপ্পরে পড়ে কলেজছাত্রীরা এইসব ক্লিনিকে আসছে। তারা জানতেও পারছে না, দিনের পর দিন কোনো রকম যথাযথ পদ্ধতি বা প্রোটেকশন ছাড়াই এভাবে ডিম্বাণু বিক্রির কারণে কতোটা মারাত্মক ক্ষতি ঘটিয়ে ফেলছে নিজেদের স্বাস্থ্যে!
খবরে বলা হয়েছে, এই ছাত্রীরা মূলত তেলেঙ্গানার নালগোন্ডা জেলার দেবরকোন্ডা, আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল মেহবুবনগর, ওয়ারানঙ্গান এবং করিমনগর এলাকার বাসিন্দা। এইসব অঞ্চলের মানুষগুলোর নিত্যদিনের সঙ্গী হলো দারিদ্র্য। তার ওপর সাম্প্রতিক সময়ের টানা খরায় দুর্দশা আরও বেড়েছে। যে কারণে সেখানকার অল্পবয়সি মেয়েদের সহজেই লোভ দেখিয়ে সম্পূর্ণ বে-আইনিভাবে এই পেশায় নিয়ে আসা হচ্ছে। আর এই কাজটি করছে বিভিন্ন ফার্টিলিটি ক্লিনিকের দালালরা।
খবরে আরও বলা হয়, ওই ফার্টিলিটি ক্লিনিকগুলো আবার ডিম্বাণু দাত্রী নির্বাচনেও বেশ ‘নাক উঁচু’ । গায়ের রং, শারীরিক গঠন, সুস্থতা এমনকি ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে চলছে যাচাই-বাছাই। শুধু তাই নয়, খুব কম সময়ের মধ্যে বেশিসংখ্যক ডিম্বাণু পাওয়ার লোভে তারা আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এইসব ডিম্বাণু দাত্রীকে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন হরমোনাল ইনজেকশন। খাওয়ানো হচ্ছে নানা ওষুধ, যেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য চরম হুমকি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমনই এক কলেজছাত্রী জানিয়েছে, মাস গেলে তাদের পকেটে ঢোকে মাত্র ১০ হাজার রুপি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব কলেজছাত্রী এই পেশায় এসে এমন উপার্জন করছে যেনে আশ্চর্য হতে হয়।
‘অবৈজ্ঞানিকভাবে লাগাতার এইসব হরমোন থেরাপির কারণে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে এইসব ছাত্রীদের শরীরে। ভবিষ্যতে মা হওয়ার সময় তাদের প্রাণঘাতী সমস্যা দেখা দিতে পারে।’ সংবাদ মাধ্যমকে এমন মন্তব্য করেছেন তেলেঙ্গানার ম্যাক্সকিউর হাসপাতালের এক চিকিৎসক।