দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ আরও শক্তিশালী হয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। আজ (শনিবার) বিকাল কিংবা সন্ধ্যা নাগাদ এই ঘূর্ণিঝড়টি বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ইতিমধ্যেই সারাদেশের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর, কক্সবাজারকে ৬ নম্বর এবং মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) থেকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলবর্তী কয়েকটি জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি জেলায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজধানী ঢাকাতে রাত থেকে শুরু হয়েছে ঝড়ো হওয়া ও বৃষ্টিপাত। জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ্ কামাল সন্ধ্যায় বলেন, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর এবং কক্সবাজারের উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে। ইতিপূর্বে ঘূর্ণিঝড় কোমেনের সময় ২১ লাখ ১৮ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এবারও একই সংখ্যক মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সরকারের সেই প্রস্তুতিও রয়েছে। সারাদেশে ৩ হাজার ৮৫১টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। সেগুলো ইতিমধ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঘূর্ণিঝড় আজ বিকাল কিংবা সন্ধ্যা নাগাদ বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরগুনা, চাঁদপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় অতিক্রম করার সময় কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী হতে অতি ভারী বৃষ্টিপাতসহ ঘণ্টায় ৬২ হতে ৮৮ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর হতে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু ১৪০ কিলোমিটার দুরে অবস্থান করছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ সংবাদে জানা যায়।
স্থানীয় প্রশাসন দুর্যেোগ মোকাবেলায় সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যেই ওইসব এলাকার সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে ভোলায় ঘরচাপা পড়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে গাছ চাপায় মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে।