দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যাদের বিয়ে হয় না তাদের বলা হয় আইবুড়ো। এমনই এক গ্রামের সন্ধান পাওয়া গেছে যেখানকার যুবক-যুবতীদের বিয়ে হয় না। আইবুড়ো থেকে যায়!
আজব এক গ্রামের সন্ধান পাওয়া গেছে। যে গ্রামজুড়ে অনেক শিক্ষিত বিবাহযোগ্য নারী-পুরুষ রয়েছে। তবে বেশির ভাগেরই বিয়ের পিঁড়িতে বসার সৌভাগ্য আজও হয়নি। বয়স বাড়লেও পাত্র কিংবা পাত্রী জোটে না তাদের ভাগ্যে। এর কারণ একটাই, এখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে বিয়ে দিতে চান না বাইরের গ্রামের মানুষ।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের চরমেঘনা নামে একটি গ্রাম। পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার করিমপুরের এক নম্বর ব্লকের হোগলবেড়িয়া পঞ্চায়েতের গ্রামটির তিনদিকেই বাংলাদেশ। চরমেঘনার পূর্ব, পশ্চিম এবং দক্ষিণে যথাক্রমে বাংলাদেশের তিন গ্রাম মায়ারামপুর, জামালপুর ও বিল গেরুয়া। গ্রামটির একদিকে রয়েছে শুধু ভারত। যে কারণে নিরাপত্তার স্বার্থেই চরমেঘনা গ্রামে বিনা প্রমাণপত্রে কাওকে প্রবেশ বা বের হতে দেয়না ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
এই চরমেঘনা গ্রামে যাতায়াতের জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া রয়েছে। বাইরের লোকদের বিএসএফের কাছে রীতিমতো কৈফিয়ত দিয়েই চরমেঘনা গ্রামে ঢোকার অনুমতি নিতে হয়। প্রতিদিন সকাল ৬টা হতে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চরমেঘনা গ্রামে ঢুকতে কিংবা বের হতে গেলে বিএসএফের কাছে ভোটার কার্ড জমা রাখা লাগে!
নিরাপত্তার এমন কড়াকড়ির কারণেই চরমেঘনা গ্রামে সচরাচর বাইরের কেও ঢুকতে চান না। গ্রামের বাসিন্দাদের রোগ-সংক্রান্ত কিছু শিথিলতা থাকলেও বিয়ের ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। কোথায়, কী কারণে যাবেন, কে, কেনো গ্রামে ঢুকতে চান তার বিস্তারিত তথ্য বিএসএফের কাছে লিপিবদ্ধ করে তবেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়। যে কারণে বাইরের কাওকে এই গ্রামে মেয়ে দেখা বা ছেলে দেখার জন্য ঢুকতে কিংবা বের হতে গেলে নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। আর এ কারণেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এই চরমেঘনা গ্রামে বাইরের কেওই তাদের ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিতে চান না।
জানা গেছে, চরমেঘনা গ্রামে মোট জনসংখ্যা প্রায় ৮৫০, এর মধ্যে ভোটার ৫৪৫ জন। তবে বাসিন্দাদের মধ্যে একটি বড় অংশই শিক্ষিত এবং বিবাহযোগ্য যুবক-যুবতী। তবে নিরাপত্তার এই কড়াকড়ির কারণে অনেকেই অনেকেই অবিবাহিত।