দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোটবেলায় দাঁত পড়ে। আর পড়ে পড়ন্ত বয়সে অর্থাৎ বুড়ো বয়সে। কিন্তু এমন এক গ্রামের খোঁজ পাওয়া গেছে যেখানে যৌবনেই দাঁত পড়ে যায়।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা গেছে, এই ঘটনাটি ঘটছে ভারতের বিহারের হাবলি খড়গপুর বিভাগের রামনকাবাদের পূর্বি খাড়িয়া গ্রামে। ওই গ্রামের প্রধান সমস্যা হলো সেখানকার যুবক-যুবতীদের দাঁত পড়ে যায়।
ওই গ্রামে প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেও রয়েছে, আবার মেয়েও রয়েছে কিন্তু বিয়ে হচ্ছে না তাদের। কি কারণে তাদের বিয়ে হচ্ছে না? কারণ শৈশবের পরে কৈশোরে পা দিতে না দিতেই এ গ্রামের ছেলে-মেয়েদের অকালে ঝরে পড়ছে দাঁত। এমন ফোকলা পাত্র বা পাত্রীকে কে বিয়ে করবে?
বর্তমানে অবস্থাটা এতোটাই শোচনীয় যে, এই গ্রামমুখো হতে চান না ভিনগ্রামের কোনও মানুষ। যে কারণে কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছে গ্রামবাসী। জানা গেছে, ইতিমধ্যে প্রায় ৫শ’ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সব বয়সের মানুষ আছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, ফ্লুওরাইড মিশ্রিত পানি খেয়ে দাঁত ঝরা কিংবা অল্প বয়সে বুড়িয়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দিচ্ছে এই গ্রামটিতে। মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার ২০১০ সালে এই গ্রামে একটি পানি প্রকল্পের সূচনা করেন। তবে সেটি কোনো কাজে লাগেনি।
এরপর ৩২ কোটি টাকা খরচ করে ফ্লুওরাইডমুক্ত পানিপ্রকল্পের কাজ হাতে নেয় সরকার। তবে সেই কাজও অসম্পূর্ণ রেখে চলে যায় ২ সংস্থার লোকজন! যে কারণে রোগের প্রকোপ বাড়তেই থাকে। ফ্লুওরাইডমুক্ত পানির জন্য বর্তমানে সরকার মুঙ্গের জেলায় ৫টি ওয়াটার ATM বসিয়েছে। এরমধ্যে ২টি এই গ্রামে বসানো হয়েছে। গ্রামবাসী ৪ টাকার বিনিময়ে ২০ লিটার পানি পান। তবে ইতিমধ্যেই একটি ATM খারাপ হয়ে গেছে।
পানি সমস্যার আপাতত সমাধান হলেও যারা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তারা ক্ষোভ চেপে রাখতে পারেননি। কারণ হলো, রোগের কারণে তাদের বাকি জীবনটা নষ্ট হতে চলেছে।