দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের স্যাক্রামেন্টোর এক অধিবাসী দুঃসাহসী এক কাজ করে বসলেন। ধূমপান ছাড়বেন তিনি তাই চড় মেরে বসলেন এক পুলিশ কর্মকর্তার গালে। এটা মায়ে লোপেজ নামের ৩১ বছর বয়সী এই নারী সম্প্রতি ধূমপান ছাড়ার জন্য নিজেকে কারাবন্দী করার সিদ্ধান্ত নেন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের স্যাক্রামেন্টো কাউন্টি কারাগারে দণ্ড ভোগকারিণী এটা মায়ে লোপেজ তাঁর অপরাধ সম্পর্কে এমন বক্তব্য দিয়েছেন।
ধূমপান নামের বদভ্যাসটি ছাড়ার জন্য কতজনই তো কতভাবে চেষ্টা করেন। তবে বিশ্বের নানা প্রান্তের বহু মানুষের অসংখ্য চেষ্টাকে অভিনবত্ব আর সমালোচনা দিয়ে যেন অনেকাংশেই পেছনে ফেলেছেন এটা মায়ে লোপেজ। ধূমপান ছাড়ার জন্য নিজেকে কারাবন্দী করার সিদ্ধান্ত নেন। আর এই সিদ্ধান্ত থেকেই কোনো ধরনের কারণ ছাড়াই স্যাক্রামেন্টো কাউন্টির ডেপুটিকে চড় মেরে বসেন এটা লোপেজ। ফলে সাথে সাথেই তাকে গ্রেপ্তার করে পাঠিয়ে দেওয়া হয় জেলহাজতে। পরবর্তী সময়ে তার এ ধরনের আচরণের কারণ জানতে করা জেরার জবাবে লোপেজ স্পষ্টতই জানিয়ে দেন যে, দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করার পরও যখন তিনি ধূমপান ছাড়তে পারছিলেন না তখন তার মনে হয় যে এজন্য কারাবন্দী জীবন কাটানোটাই হয়তো সবচেয়ে ভালো হবে। আর স্বেচ্ছায় কারাবন্দী হওয়ার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্যই স্থানীয় কাউন্টির ডেপুটিকে চড় মারার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ডেপুটির জেল অফিসের সামনে একটানা কয়েক ঘণ্টা বসেও ছিলেন তিনি।
এদিকে ঘটনার আকস্মিকতায় হতচকিত কাউন্টি ডেপুটি ম্যাট ক্যাম্পয় জানান, তিনি যখন তার অফিস শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন তখনই হঠাত্ করে কোথা থেকে এসে যেন গালে চড় বসিয়ে দেন এটা লোপেজ নামের এই নারী। প্রথমটায় এ বিষয়টাকে কোনো সংক্ষুব্ধ অপরাধীর আত্মীয় বা সদ্য জেল থেকে ছাড়া পাওয়া কোনো অপরাধীর রাগের বশবর্তী হয়ে করা কাজ বলেই ভেবেছিলেন ক্যাম্পয়। এ কারণে পুলিশের উপর আক্রমনের অভিযোগে সাথে সাথে তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়। তবে এরপর এটা লোপেজের এমনতর কাণ্ডের তদন্ত করতে যেয়েই বেরিয়ে আসে তার ধূমপান ত্যাগের অদ্ভুতুরে পরিকল্পনার কথা।
‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র খবরে জানানো হয়, কাউন্টি পুলিশের শেরিফের ডেপুটি ম্যাট ক্যামপয়ের গালে চড় মারেন তিনি। ম্যাট বলেন, ‘আচমকা তিনি (লোপেজ) ছুটে এসে আমার গালে চড় মারেন।’
লোপেজের বরাত দিয়ে ম্যাট বলেন, লোপেজ ধূমপান ছাড়তে চান। কিন্তু কোনোভাবেই তিনি তা পারছিলেন না। তাই একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে আঘাত করার কথা ভাবেন। কারণ, এতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হবে। আর কারাগারে ধূমপানের সুযোগ না থাকায় তিনি হয়তো এ আসক্তি থেকে মুক্তি পাবেন।
কাউন্টির অ্যাটর্নি কার্যালয়ের মুখপাত্র শেলি ওরিও জানান, এ ঘটনার পর লোপেজকে ৬৩ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আলোচনা-সমালোচনা যাই হোক না কেন, এখন কিন্তু জেলহাজতে ধূমপান-মুক্ত পরিবেশেই দিন কাটাতে পারছেন লোপেজ নামের এই নারী।
ধূমপান ত্যাগের জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো নিজের ইচ্ছাশক্তি। ধূমপান ছাড়ার জন্য নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আপনি যতটা দৃঢ় থাকবেন, ততই সাফল্যের সম্ভাবনা বাড়বে। ধূমপান আপনার নিজের এবং কাছের মানুষটির বা আপনার শিশুসন্তানটির জন্য পরোক্ষভাবে ক্ষতি ডেকে আনছে।
সূত্রঃ প্রথম আলো।