দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যতো দিন গড়াচ্ছে ততোই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পরিধি বাড়ছে। তাই আধুনিক প্রযুক্তি মানুষকে ক্রমেই স্কিনে বন্দি করে ফেলছে।
ছেলে-মেয়ে থেকে শুরু করে বড়-ছোট সকলের রুটিন যেনো একঘেয়ে হয়ে পড়েছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে, ঘড়ির কাটার দিকে তাকানোর যেনো সুযোগ নেই। খাওয়া-দাওয়ার কথাও মনে থাকে না কারও। আবার বয়সের ব্যবধানেও নেই কোনো রকম বাধা-বিপত্তি। এক সম্পূর্ণ উন্মুক্ত আলোচনা। যে যার মতো করে স্ট্যাটাস দিয়ে যাচ্ছে। ভালো লাগা খারাপ লাগার বিষয়গুলো শেয়ার করে নিচ্ছে একে অপরের সঙ্গে। আবার অনেক ক্ষেত্রে নেই কোনো রক্তের সম্পর্কও। এখানে ধর্মও কোনো বাধা নেই। প্রতিনিয়ত নির্মাণ করে চলেছেন তাদের নিজেদের আনন্দ, বেদনা এবং হতাশার গল্প। এটিই হলো আসলে বর্তমান প্রজন্মের সোশ্যাল মিডিয়া।
নিজের অসুস্থ্যতা হতে শুরু করে পরিবার, বন্ধ-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশি, দেশ-বিদেশী সকলের খবরাখবর পাওয়া যায় মুহূর্তের মধ্যেই। রাজনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক এমনকি ঘটে যাওয়া সমাজের অসঙ্গতিপূর্ণ সবঘটনায় উঠে আসে এখানে।
সিলেটে শিশু রাজনের খুনিদের গ্রেফতার এবং দ্রুত বিচারেও প্রধান ভূমিকা রাখে এই সোশ্যাল মিডিয়াই। সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে বিষয়টি সকলের দৃষ্টিতে চলে আসে এবং দেশজুড়ে এর প্রতিবাদ করা হয়।
রাজনকে নির্যাতনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার কারণে ফুঁসে উঠে দেশ-জনতা। সোহাগী জাহান তনু হত্যার বিচারের দাবিও সর্বপ্রথম উচ্চকিত হয়ে ওঠে ফেসবুকের কারণে। সম্প্রতি গুলশান হামলার হোতাদের চিহ্নিত করতেও ফেসবুক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। হামলাকারীদের ছবি দেখে দ্রুতই তাদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।
এই মাধ্যমটি যেমন আমাদের অনেক উপকারে আসছে তেমনি এর কিছু বিরূপ প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই নানামুখী হয়রানির শিকার হতে হয় নারীদের। আবার এই সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করছে সন্ত্রাসবাদীরা। জঙ্গিরা তাদের বক্তব্য প্রচারের জন্য ব্যবহার করছে এসব সোশ্যাল মিডিয়াকে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সংগ্রহ করছে তাদের সদস্য। এক্ষেত্রে অবশ্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় টুইটার। তাছাড়া উঠতি বয়সিদের বখে যাওয়ার অন্যতম কারণও হলো এই সোশ্যাল মিডিয়া। বর্তমান প্রজন্মের সন্তানরা তাই ক্রমেই বন্দি হয়ে পড়ছে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
তাই এর ভালো দিকগুলো গ্রহণ করতে হবে এবং খারাপ দিকগুলো বর্জন করতে হবে। তা নাহলে এর সুফল আমরা কখনও পরিপূর্ণভাবে ভোগ করতে পারবো না।