দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ৪ বছর আগে স্বামী মারা গেছে। ৪ সন্তান থেকেও নেই, যে যার মতো থাকে। ৭০ বছর বয়সী কালুজান বেওয়া বেঁচে থাকার তাগিদেই ভিক্ষা করেন। তার ইচ্ছে, শেষ জীবনে হলেও স্বামীর রেখে যাওয়া জায়গায় একটি মসজিদ নির্মাণ করা।
সে কারণে তার ভিক্ষার টাকায় শুরু করেন সঞ্চয়! বয়স্ক ভাতা ও বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে সংসার চালানোর পর যা উদ্বৃত্ত থাকে, তাই জমাতে থাকেন তিনি। জমানো সেই টাকা দিয়ে তিনি মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ইতিমধ্যে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষও হয়েছে!
কালুজান বেওয়ার দানে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের শীরঘাটা গ্রামে নির্মিত এই মসজিদটিতে বর্তমানে মুসুল্লিরা নিয়মিত নামাজ পড়ছেন। বিনা বেতনে একজন ইমামও রাখা হয়েছে ওই মসজিদে।
বৃদ্ধা কালুজান বেওয়া জানান, ভিক্ষা ও বয়স্ক ভাতার টাকায় সংসার চালানো পর যে অর্থ উদ্বৃত্ত হতো সেই অর্থ তরফপুর ইউনিয়ন পরিষদ সচিব ফজলুর রশিদ বাজেদের কাছে জমা রাখতাম। এরপর সেই জমানো টাকা দিয়ে আমি স্বামীর রেখে যাওয়া শেষ সম্বল ২৪ শতাংশ জমির উপর মসজিদটি নির্মাণ করেছি।
ইউনিয়ন পরিষদ সচিব ফজলুর রশিদ জানান, বয়স্ক ভাতা এবং ভিক্ষার টাকা তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার কাছে জমা রাখতে থাকেন। এভাবে খেয়ে না খেয়ে ২ লাখ ৪ হাজার টাকা জমা করেন কালুজান। এলাকাবাসী তাকে জমানো টাকা দিয়ে স্বামীর নামে খরচ করার পরামর্শ দিলেও তাদের কথায় কান না দিয়ে কালুজান তার মনের কথা সবাইকে অবহিত করেন।
বজলুর রশিদ আরও জানান, ইতিমধ্যে মসজিদ ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে, তবে জমানো টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে ঘরের মেঝে পাকা করা সম্ভব হয়নি। তরফপুর-মির্জাপুর-বাঁশতৈল যাওয়ার রাস্তাসংলগ্ন জমির পাশে এই মসজিদটি নির্মিত হওয়ায় এলাকার লোকজনের পাশাপাশি পথচারীরাও নামাজ পড়ছেন। একজন ইমামও রাখা হয়েছে। তবে বর্তমানে তিনি বেতন নেন না।
শুধু তাই নয়, মসজিদের মোমবাতি এবং আগরবাতিসহ আনুষাঙ্গিক খরচও বৃদ্ধা কালুজান বেওয়া বহন করছেন!