দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চেষ্টা ও পরিশ্রম করলে মানুষ যে কতো দূর যেতে পারে তা ভাবলে সত্যিই অবাক হতে হয়। যেমন দৃষ্টিশক্তি না থাকা সত্ত্বেও মিশরের কিছু নারী তৈরি করেছেন অর্কেস্ট্রা, সংগীত দিয়ে মৃগ্ধ করছেন হাজার হাজার শ্রোতাকে।
ভায়োলিন, চেলো ও বাঁশির মতো বাদ্যযন্ত্র বাজাতে শেখা এমনিতেই যথেষ্ট কঠিন। স্বাভাবিক মানুষের যেখানে এই বাদ্যযন্ত্র আয়ত্তে আনতে বেগ পেতে হয় সেখানে অন্ধ কিছু নারী কিভাবে বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারেন তা ভাবলে বিস্ময়ের অন্ত থাকে না। তবে বিস্ময়ের শেষ এখানে নয়। এই নারীরা রীতিমতো গঠন করেছেন অর্কেস্ট্রা। এর নাম আল নূর ওয়াল আমাল অর্কেস্ট্রা।
আল নূর ওয়াল আমাল মিশরের একটি অন্ধদের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। ১৯৫৪ সালে গঠিত হবার পর থেকে এটি নানাভাবে দৃষ্টিশক্তি হারোনো মানুষদের সহযোগিতা করে আসছে। তবে তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান হল এই অর্কেষ্ট্রাটি গঠন করা। অন্ধ নারীদের নিয়ে এ ধরনের উদ্যোগ বিশ্বে সত্যিই বিরল। প্রথম পর্যায়ে ১৫ জন নারী নিয়ে গঠিত হয়েছিল এই অর্কেস্ট্রা। বর্তমানে বাড়তে বাড়তে এর সদস্য সংখ্যা ৪৮। এই অর্কেস্ট্রা ইতোমধ্যে ৫টি মহাদেশে তাদের সংগীত পরিবেশন করেছে।
অর্কেস্ট্রায় সম্মীলিতভাবে সংগীত পরিবেশন করা এমনিতেই দুরূহ একটি কাজ। তারপর চোখে না দেখতে পাওয়ার কারণে এই শিল্পীদের সংগীতের স্বরলিপি সম্পূর্ণ আয়ত্তে আনতে হয়েছে। এতোকিছুর পরও স্টেজে এতোজন নারী সমন্বয় রেখে কিভাবে সংগীত পরিবেশন করেন তার ব্যাখ্যা মেলা সত্যিই সম্ভব নয়। তাছাড়া এই শিল্পীরা যেনোতেনো সংগীত পরিবেশন করেন না। মোৎজার্ট, স্ট্রসসহ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সংগীত স্রষ্টাদের সংগীত পরিবেশন করেন তারা। একজন সাধারণ মানুষের পক্ষেই এই মহান সংগীত স্রষ্টাদের সংগীত আত্তস্থ করা অত্যন্ত কঠিন।
এই অর্কেস্ট্রার সদস্য হতে চাইলে একজনকে চারটি বাদ্যযন্ত্রের একটি অবশ্যই শিখতে হবে। দৈনিক ৫ ঘন্টা চর্চা করা বাধ্যতামূলক প্রত্যেক সদস্যের জন্য। বাদ্যযন্ত্র আয়ত্তে চলে আসলে পরবর্তীতে শিক্ষক দ্বারা তারা প্রশিক্ষিত হন। তাদের সংগীত বোঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয় ব্রেইল পদ্ধতি।
তথ্যসূত্র: www.odditycentral.com