দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাত্র ১৭ বছর বয়সে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। এক দুর্ঘটনায় চেহারা হয়ে গেছে বিকৃত। দেখলে ভয় লাগে। তবুও সন্তানদের নিয়ে সুখি সংসার করছেন এই দম্পতি।
এমন ঘটনা খুব কমই দেখা যায়। কারণ হলো মাত্র ১৭ বছর বয়সেই তারা তাদের জীবনের ভালোবাসাকে খুঁজে পেয়েছেন। ওই বয়সে যারা প্রেমে পড়েছেন তাদের খুব কম সংখ্যকই প্রেমকে বিয়ে পর্যন্ত নিতে পেরেছেন। এই দম্পতি তাই করেছেন। ভারতের বেঙ্গালুরুর জয়প্রকাশ হলো সেই খুব কম সংখ্যক প্রেমিকদেরই একজন।
সম্প্রতি Being You নামে একটি ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে মাত্র ১৭ বছর বয়সে তার জীবনের ভালোবাসার মানুষ সুনিতার দেখা পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। এর ১০ বছর পর তাকে বিয়েও করেন। তাদের প্রেমের গল্প কঠিন সব চড়াই-উতরাই পেরিয়ে পরিণতি লাভ করেছে শুধুমাত্র সত্যিকারের এক ভালোবাসার জোরে।
জয়প্রকাশের প্রেমের গল্প পোস্ট করার পরপরই তা নিয়ে ফেসবুকে ব্যাপক শোরগোল ওঠে। ১ লাখ ২০ হাজার লোক তার পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানান। শেয়ার হয় ৩১ হাজার বার!
পোস্টে জয়প্রকাশ স্কুলে থাকা অবস্থায়ই সুনিতার প্রতি তার মনোভাবের কথা বলেন। তিনি লিখেছেন ঠিক এভাবে, ‘আমার বয়স যখন ১৭, তখনই একদিন আমাদের ক্লাশরুমের পাশদিয়ে একটি মেয়েকে হেঁটে যেতে দেখি। আমি তার দিক থেকে সত্যিই নজর ফেরাতে পারছিলাম না। তার মতো আর কাওকেই আমি এর আগে কখনও দেখিনি। ’
এরপর জয়প্রকাশ এবং সুনিতা বন্ধু হয়ে যান। তবে কিছুদিন পর দুজন দু’শহরে চলে গেলে তাদের মধ্যে মাঝেমধ্যেই শুধু সাক্ষাৎ হতো। তবে তাদের মধ্যে তখনও কোনো রকম প্রেমে পড়ার উপলব্ধিই আসেনি।
সুনিতার প্রেমে পড়েছেন সেটি বুঝার মুহূর্তটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে জয়প্রকাশ বলেছেন, ‘২০১১ সালের নভেম্বরে হঠাৎ করেই এক বন্ধু আমাকে ফোন করে বলে সুনিতা এক সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। তাকে কোইম্বাতোরে নেওয়া হয়েছে। সুনিতাকে দেখতে গিয়ে আমি তাকে দেখে স্মম্ভিত হয়ে পড়ি। তার মাথার চুলগুলো সবই উঠে গেছে। চেহারাটি একেবারে থেতলে আলাদা হয়ে গেছে। কোনো নাক নেই তার। মুখও নেই, দাঁতও নেই। হাঁটছিল ৯০ বছরের বুড়ির মতোই। তার অবস্থা দেখে আমি প্রথমে মুষড়ে পড়ি। ঠিক সেই মুহূর্তেও আমি উপলব্ধি করি যে আমি তাকে ভালোবাসি। ’
তারপর সেদিন রাতেই জয়প্রকাশ সুনিতাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। সুনিতা তার কথা শুনে ‘হেসে উঠেছিল তবে না বলেনি’, বলেছেন জয়প্রকাশ।
এরপর হতে তারা একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এরপর ২০১৪ সালে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা।
জয়প্রকাশ বলেছেন, এখন আমাদের দুটো সন্তান। রয়েছ একসঙ্গে জেগে ওঠার মনোরম সব সকাল। আজ আমি আমার কৈশোরের সেই ভালোবাসার সঙ্গেই ঘর-সংসার করছি। আজ আমি সত্যিই সুখি।