দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ক্রমেই রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে বলিউডের সম্ভাবনাময়ী অভিনেত্রী জিয়া খানের মৃত্যু নিয়ে। এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড কিংবা আত্মহত্যা হলেও সেটির পিছনে কি রহস্য রয়েছে তা নিয়েই আলোচনা হচ্ছে বেশি।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে গত দু’দিন ধরেই চলছে নানা কানাঘুষা। অবশ্য জিয়া খানের এ মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে মুম্বাই পুলিশ। ৩ জুন রাতে মুম্বাইয়ের জুহু বিচ সংলগ্ন এলাকার বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশকে জানানো হয় জিয়ার পরিবারের তরফ থেকে। কিন্তু তার আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে পরিবারের কারও কাছ থেকে কোন সঠিক বক্তব্য এখন পর্যন্ত মেলেনি। বিষয়টি বর্তমানে তদন্ত করছে মুম্বাই পুলিশ।
তবে জিয়া খানের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে, ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন এ অভিনেত্রী। বিশেষ করে তার বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে। এ মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে মুম্বই পুলিশ জিয়ার আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
এদিকে জিয়া খানের মরদেহ গতকাল ময়নাতদন্তের জন্য কুপার হাসপাতালে নেয়া হয়। এ তদন্ত রিপোর্টটি আপাতত গোপন রেখেছে পুলিশ। এদিকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকলেও জিয়া খুব শিগগিরই বলিউডে ফিরবেন বলেও কাছের মানুষদের জানিয়েছিলেন। ২০১০ সালের পর থেকে আর কোন ছবিতে কাজ করেননি তিনি। তবে সামপ্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয়ের ব্যাপারে পরিচালকদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল তার।
অভিনয় জীবনে খুব কম সময়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন বলিউডের এই ২৫ বছর বয়সী অভিনেত্রী জিয়া খান। তিনি বড় হয়েছেন যুক্তরাজ্যে। তবে বলিউডে কাজ করার কারণে ভারতে আসা হয় তার। সমপ্র্রতি মা-বাবাসহ যুক্তরাজ্য থেকে মুম্বাইতে চলে আসেন জিয়া। থাকতেন মুম্বাইয়ের জুহু বিচ সংলগ্ন এলাকার একটি ফ্ল্যাটে। অমিতাভ বচ্চনের মতো অভিনেতার বিপরীতে মাত্র ১৯ বছর বয়সে রামগোপাল বর্মার ‘নিঃশব্দ’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয় জিয়া খানের। সেই ছবিতে ব্যাপক খোলামেলা হয়ে কাজ করে চরম আলোচনায় আসেন তিনি। প্রথম এ ছবির জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে সেরা নবাগত হিসেবে মনোনয়নও পেয়েছিলেন তিনি। এ ছবির পর আমির খানের বিপরীতে ‘গজনি’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে আরও একবার আলোচনায় আসেন জিয়া খান। ছবিতে তার অভিনয়-পারফরমেন্স বেশ প্রশংসিত হয়। এছাড়াও ২০১০ সালে ‘হাউসফুল’ ছবিতে কাজ করেন তিনি। এটিই ছিল তার অভিনীত সর্বশেষ ছবি।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বিশেষ করে বিনোদনমূলক পত্রিকার দু’দিনের প্রধান শিরোনাম হচ্ছেন জিয়া খান। জিয়া খানের মতো এত সম্ভাবনাময়ী অভিনেত্রীর মৃত্যু সংবাদে অমিতাভ বচ্চন তার টুইটার একাউন্টে লিখেছেন, এটা কিভাবে সম্ভব। এটা একদমই অবিশ্বাস্য। আমি কিছুতেই খবরটি মেনে নিতে পারছি না। জিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু তনুজ গার্গ তার টুইটার একাউন্টে লিখেছেন, যুক্তরাজ্যে থাকা অবস্থায় আমরা একসঙ্গে অনেক ভাল সময় কাটিয়েছি। অনেক ভাল মনের মানুষ ছিল ও। ওদিকে জিয়া সর্বশেষ ফোন কল করেছিলেন অভিনেতা দম্পতি আদিত্য পাচৌলি ও জরিনা ওয়াহাবের ছেলে সুরাজ পাচৌলিকে। সেই সূত্র ধরে পুলিশ সুরাজকে গতকাল জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। জিয়া আত্মহত্যা করেন রাত ১১টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে। এর আগে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে তিনি সর্বশেষ কল করেন সুরাজকে।
একজন সম্ভাবনাময় অভিনেত্রী এভাবে প্রস্থানকে অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। আর তাইতো অনেকেই বলেছেন, রহস্য যাই থাক না কেনো- নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সঠিক কারণ বের করে জনসমক্ষে তা প্রকাশ করতে হবে। যাতে আর কাওকে কখনও এভাবে চলে যেতে না হয়।