দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে এখনকার দিনে যোগাযোগ অনেকটা সহজ হয়ে গেছে। প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রা সহজ করেছে, কম সময়ে সব কাজ সেরে ফেলা যাচ্ছে। কিন্তু এই প্রযুক্তি কি কোনভাবে আপনার সম্পর্কের ক্ষতি করছে?
একটা সময় ছিল যখন রাতে খাবার সময় স্বামী-স্ত্রী এক সাথে বসে মুখোমুখি সারাদিনের নানান কথা, পারিবারিক সমস্যা শেয়ার করতেন। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন স্মার্ট ফোন, কম্পিউটার এবং অন্য সব ডিভাইসের মাধ্যমে আমাদের মধ্যকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে গেছে। প্রয়োজন ছাড়া এখন আমরা একে অন্যের সাথে কথায় বলি না — ফলে সম্পর্কের মাঝে ধীরে ধীরে তৈরি হচ্ছে দূরত্ব, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পারস্পারিক সম্পর্কের।
আমরা অবশ্যই এটা এড়িয়ে যেতে পারি না যে প্রযুক্তি আমাদের ভার্চুয়াল জগতে একে অপরকে কাছে আনছে তবে এর জন্য আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে অধিক মূল্য দিতে হচ্ছে। দূরত্ব তৈরি হচ্ছে বাস্তব সম্পর্কের মাঝেও।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে ৮০% মানুষ তাদের খাবার টেবিলে ফোন অথবা ল্যাপটপ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ফলে তারা পাশের মানুষটির সাথে কথা বলতেও অনীহা প্রকাশ করেন ব্যস্ততার অজুহাতে। গবেষণায় আরও দেখা যায় ৭৬% স্বামী-স্ত্রী তাদের বিছানায় একসাথে শুতে গেলে খুব কাছাকাছি থাকার পরও একে অপরের সাথে কথা বলার সময় পান না কারণ তারা নেট ব্রাউজিং করাতেই ব্যস্ত থাকেন। ৮০% মানুষ জানান তারা যখন ফোনে কথা বলেন অথবা ল্যাপটপে কাজ করেন, তখন কারো হস্তক্ষেপ এমনকি তাদের জীবন-সঙ্গিনীর হস্তক্ষেপও পছন্দ করেন না। ৮৯% দম্পতি জানায় তারা একসাথে বন্ধুদের পার্টি বা ডিনার আয়োজনে অংশ চান না। কিন্তু কিছুদিন আগেও এই বিষয়টির প্রচলন ছিলো। দম্পতিরা এখন নেটেই বন্ধুদের সাথে আড্ডা অথবা ভিডিও কনফারেন্সে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
প্রযুক্তি আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে, তাই আমরা প্রযুক্তিকে পরিহার করতে পারবোনা। তবে আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে আমরা যেন প্রযুক্তির দাসে পরিণত না হই। প্রযুক্তির মাধ্যমে যোগাযোগ কোনভাবেই সরাসরি সাক্ষাৎতের সমকক্ষ হতে পারে না। তাই প্রযুক্তি আমাদের প্রিয় মানুষটির সাথে সম্পর্কের বিচ্ছেদ বা সম্পর্ক হালকা করে তোলার আগেই আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। নিজেকে প্রযুক্তির হাতে সমর্পণ না করে দিয়ে বাস্তব সম্পর্ককে গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।
সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে করণীয়?
- প্রিয় মানুষটির সাথে সরাসরি সাক্ষাতের মাধ্যমে যোগাযোগের বা কথা বলার চেষ্টা করুন, এক সাথে একান্ত কিছু সময় কাটান। এ সময় মোবাইল ফোন বন্ধ রাখুন।
- আপনি অবশ্যই আপনার ল্যাপটপটি বন্ধ রাখবেন যখন আপনি আপনার প্রিয় মানুষটির সাথে ঘুমোতে যাবেন অথবা রাতের খাবার খেতে আত্মীয়, স্বজন ও পরিবারের সাথে টেবিলে বসবেন।
- আপনি যখন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে কথা বলবেন, তখন মোবাইল অথবা ল্যাপটপে নেট ব্রাউজ করা বন্ধ রাখুন, এটা অসৌজন্যমূলক আচরণ।
তথ্যসূত্রঃ দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া